শেরপুর জেলার মুন্সিপাড়া এলাকায় অবস্থিত অর্ধশত বছরের পুরনো এবং বিখ্যাত কাকলী সিনেমা হলটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। জানা গেছে, হলটি ভেঙে সেখানে সাত তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে মালিকপক্ষ। সর্বশেষ এই হলে প্রদর্শিত হয়েছে ঈদের ছবি ‘পোড়ামন-২’।
বছরের পর বছর লোকসানের ভার বইতে না পারায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সিনেমা হলের মালিক পক্ষের কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।
হলের একজন কর্মী জানান, কাকলী সিনেমা হলের জায়গায় সাততলা যে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে। তার পঞ্চম তলায় ছোট একটি সিনেপ্লেক্স রাখার পরিকল্পনা করেছে মালিক পক্ষ। তবে এটি এখনও চূড়ান্ত নয়। আর নতুন ভবনের চতুর্থ তলা পর্যন্ত থাকবে মার্কেট। ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় হবে গেস্ট হাউজ।
ওই কর্মী আরও জানান, নায়করাজ রাজ্জাক ও নায়িকা ববিতাসহ অনেক বড় বড় অভিনেতা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে গেছেন এই হলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় শেরপুর শহরে ছয়টি সিনেমা হল ছিল। ঢাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ছবি মুক্তি দেওয়ার প্রতিযোগিতা ছিল হলগুলোর মধ্যে; ব্যবসাও ছিল জমজমাট। কিন্তু বাংলাদেশে সিনেমার মান পড়ে যাওয়ায় এবং ঘরে বসে বিনোদনের অনেক সুযোগ সুবিধা আসায় দর্শক এখন আর হলে আসে না।
একই অবস্থা দেশের বিভিন্ন মফস্বল শহরেও। চ্যানেল আই অনলাইনকে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির এক নেতা জানান, ১২০০ থেকে সারাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা নেমে এসেছে ২৫০ তে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় যেসব সিনেমা হল টিকে আছে প্রায় বেশিরভাগই হল নোংরা পরিবেশ ও অব্যবস্থাপনার চিত্র।
এসব হলের আসবাবপত্র এখনো মান্ধাতা আমলেরই রয়ে গেছে। হলের অধিকাংশ সিট ভাঙা ও ছারপোকার বাসায় পরিণত হয়েছে। হলের টয়লেটগুলো অত্যন্ত অপরিষ্কার ও নোংরা। হলে দর্শকদের তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। সিনেমা হলগুলোর নোংরা পরিবেশ ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে দর্শকদের প্রচুর অভিযোগ থাকলেও এদিকে হল কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি নেই বললেই চলে।