পাহাড়ি ঢলে আগাম বন্যায় দেশের সবগুলো হাওর থেকে যখন আমাদেরকে প্রতিদিন দু:সংবাদ শুনতে হচ্ছে, তখন একটি সুসংবাদ হলো- বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু আরো কিছুটা বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব মতে, ২০১৬ সালে তার আগের বছর থেকে গড় আয়ু বেড়ে ৭১ বছর ৬ মাসে দাঁড়িয়েছে। নতুন হিসাবে নারীদের গড় আয়ু পুরুষের চেয়ে বেশি। আশা জাগানিয়া সংবাদ হলো, বিশ্বে বর্তমান গড় আয়ু হচ্ছে ৭১ বছর ৪ মাস। সেই তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু দুই মাস বেশি। এটাকে নিশ্চয়ই সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক বড় অর্জন বলে আমরা মনে করছি। কেননা এটা সহজেই বোঝা যায় যে, গড় আয়ু বাড়ার মানে হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকারসহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে দেশের প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, এই শতকের শুরুর দিকেও আমরা ক্রয়ক্ষমতাসহ আরো অনেক দিক থেকে মানুষের সীমাবদ্ধতার চিত্র দেখেছি। কিন্তু তার বিপরীতে এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেকগুণ বেড়েছে। যেমন; আরো কয়েকবছর পূর্বে যেখানে সাধারণ মানের মোবাইল ফোন মানুষের সাধ্যের বাইরে একপ্রকার স্বপ্ন ছিল, সেখানে এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন ও থ্রিজি ইন্টারনেট এসে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এক ধরণের বিপ্লব এনে দিয়েছে। শুধু এক্ষেত্রে নয়, বরং যেকোন ভালো কিছুর সুযোগ পেলে তার বহুমুখী ব্যবহার করার মতো মেধা বাংলাদেশের মানুষের আছে বলে আমরা মনে করি। সবক্ষেত্রেই যে এমন আশা জাগানিয়া বিপ্লব হয়েছে তার প্রমাণ গড় আয়ু বাড়ার হিসাব। স্বীকার করতে হবে যে, বাংলাদেশ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত উদ্যোগেই এমন সম্মানজনক অর্জন সম্ভব হয়েছে। তাই শত দুঃসংবাদের মধ্যে এমন খুশির সংবাদ পাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের আমরা অভিনন্দন জানাই। পাশাপাশি আমরা বিশ্বাস করি, সরকার চাইলে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত ও কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করে এগিয়ে গেলে শুধু এ দিক থেকে নয়, বরং সকল দিক থেকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। তাই এই মুহূর্তে দুর্নীতিসহ বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে, বিশেষভাবে যুবসমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেননা যুব সমাজকে সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমে আরো বেশি যোগ্য নাগরিক গড়ে তোলা সম্ভব হবে যারা সব বয়সেই হবে বাংলাদেশেরে সম্পদ।