স্টার সানডে উদযাপন উপলক্ষে আনন্দ ফূর্তির টাকা যোগাড় করতে মাদকাসক্ত সঞ্জীব চিরান নিজের নানী বেশথ চিরান এবং ও খালা সুজাতা চিরানকে খুন করে বলে জানিয়েছে র্যাব। বেশথ চিরানের বড় মেয়ে নির্জলার ছেলে সঞ্জীব। গত এক মাস আগেই সঞ্জীব তার বন্ধুদের নিয়ে খালার বাসায় চুরি করার পরিকল্পনা করেছিল।
মঙ্গলবার রাজধানীর কালাচাঁদপুরে আলোচিত গারো মা-মেয়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেরপুরের নলিতাবাড়ি এলাকা থেকে সঞ্জীব চিরান, রাজু সাংমা ওরফে রাসেল, প্রবীন সাংমা ও শুভ চিসিম ওরফে শান্তকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এসব কথা জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন: গ্রেপ্তার হওয়া চারজনই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রথমে তারা বেশথ চিরানকে শ্বাসরোধ করে, পরে সুজাতা চিরানকে ছোরা দিয়ে গলা ও পেটে জখম করে হত্যা করে। খালার বাসায় চুরির জন্য গেলেও মাতাল থাকায় স্টার সানডের টাকা যোগাড় করতে এ হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয় তারা। জানা যায় সঞ্জীব আগেই থেকেই মাদকাসক্ত ছিল।
সঞ্জীব ও তার বন্ধুরা স্টার সানডে উপলক্ষে আনন্দ ফুর্তি করার জন্য খালার বাসায় চুরির পরিকল্পনা করে মুফতি মাহমুদ বলেন: গত ১ মাস আগে সঞ্জীব তার বন্ধু শান্ত ও প্রবীনের সঙ্গে খালা সুজাতার বাসায় চুরির পরিকল্পনা করে। সঞ্জীব ধারণা করে, খালার পরিবারের সবাই চাকরি করে তাই তাদের বাসায় বেশ টাকা থাকতে পারে।
গত ১৯ তারিখ বন্ধু শান্ত ও প্রবীনকে নিয়ে ঢাকায় আসে সঞ্জীব। ঢাকার কুড়িলে একটি আবাসিক হোটেলে কর্মরত তাদের বন্ধু রাজুকে ঢাকায় আসার বিষয়টি জানায় এবং রাজুর আরেক বন্ধুর বাসায় রাত্রি যাপন করে।
‘‘পরে আনুমানিক বিকেল ৩টার দিকে তারা সুজাতার বাসায় প্রবেশ করে। তখন সুজাতা, তার মেয়ে মায়াবী ও মায়াবীর দেড় বছরের শিশু বাসায় ছিল। আত্মীয় হিসেবে সুজাতা তাদেরকে চা-বিস্কুট দেয়। পরে খালা সুজাতা সঞ্জীবকে ২০০ টাকা দিয়ে দেশীয় মদ আনতে বলে।
সঞ্জীব মদ নিয়ে আসলে সবাই মিলে মদ পান করে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী সুজাতাকে বেশি মদ পান করিয়ে নেশাগ্রস্থ করে ফেলে। এসময় সুজাতার মেয়ে মায়াবী তার কর্মস্থলে চলে যায়।
তখন তারা চারজন চুরি করতে উদ্যোগী হলে বাসায় সুজাতার মা বেশেথ চলে আসেন। তাদের পরিকল্পনা বাধাগ্রস্থ হতে পারে ভেবে প্রথমে বেশেথকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তারা।
তারপর ওই বাসা থেকে আরেকটি ছুরি ও সঙ্গে আনা ছুরি দিয়ে মদ্যপ সুজাতাকে কুপিয়ে খুন করে শান্ত ও সঞ্জীব। তখন ঘরে অনেক খোঁজাখোঁজি করেও টাকা না পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।’’
মুফতি মাহমুদ জানান: বাসা থেকে বের হয়ে আব্দুল্লাহপুর এসে নালিতাবাড়ির টিকিট কাটে এবং তাদের ব্যবহৃত ছুরি কাউন্টারের পেছনে ফেলে যায়। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।