পার্থের ঘড়িতে ছয় মিনিট আগে চারটার বেল বেজেছে। প্রিনডিভিল স্ট্যান্ড প্রান্ত থেকে বল হাতে আসছেন মিচেল স্টার্ক। প্রস্তুত ইংল্যান্ডের সেট ব্যাটসম্যান জেমস ভিন্স। তার সামনে যা আসল তাকে ক্রিকেট বল বলা হচ্ছে না। কেউ বলছেন গোলা, কেউ বলছেন বজ্রপাত। মাইকেল ভন কেতাবি ভাষায় নাম দিয়েছেন, ‘একুশ শতকের বল।’
বিস্ময়কর ওই ডেলিভারির গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৩.৯ কি.মি! বাঁহাতি স্টার্ক ‘রাউন্ড দ্য উইকেটে’ নন-স্ট্রাইক স্টাম্পের বেশ খানিকটা পাশ থেকে মার্কে আসেন। বল পিচ করে লেগস্টাম্পে। স্বভাবতই ভিন্স ফ্লিক করতে যান। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো ওই গতির বল লেগব্রেক হয়ে যায়! আউট সুইং করে অফস্টাম্পে লাগে!
শেন ওয়ার্ন ওয়াইড ওয়ার্ল্ড স্পোর্টসে তখন ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই বলের সামনে ভিন্সের আসলে কিছু করার নেই। যা তার করা উচিত ছিল তা অসম্ভব। এটা নিরেট একটা লেগব্রেক।’
কিছুক্ষণ পরে ওয়ার্ন বলটির রিপ্লে পোস্ট করে লেখেন, ‘বল অব দ্য অ্যাশেজ এন্ড সামার।’
ওই বল খেলতে ভিন্স যে ধরনের সিদ্ধান্ত নেন তা সঠিক ছিল বলে মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তিনি বলেন, ‘ভিন্স লেগ সাইডের যে অ্যাঙ্গেলে হিট করতে চেয়েছিলেন সেটা একেবারেই ঠিক। এভাবে সুইং করলে কিছু করার থাকে না। তিনি সোজা খেলতে পারতেন কিন্তু সেটা অসম্ভব।’
১৯৯৩ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে মাইক গ্যাটিংকে আউট করতে শেন ওয়ার্ন এমন একটি বল করেছিলেন। যেটাকে এতদিন বলা হতো ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’। সেই বলটির থেকেও স্টার্কের এই গোলা ভয়ঙ্কর। ওয়ার্নের ওই ডেলিভারি আউট সাইড লেগ স্টাম্পে পিচ করে স্পিন করে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের অফস্টাম্পে লাগে।
অ্যাশেজের তৃতীয় ম্যাচে স্টার্কের এমন ডেলিভারি দেখার পর ওয়াসিম আকরামও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, ‘এর নামই জাফা! বিস্ময়কর ডেলিভারি। তুমি আমার বল করার দিনগুলো স্মরণ করিয়ে দিলে। বাঁহাতিদের জন্য তুমি গর্ব।’