কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মেরিনড্রাইভ হিমছড়ি পয়েন্টে ভেসে উঠেছে বিশালাকৃতির মৃত নীল তিমি। সংশ্লিষ্টরা ময়না তদন্ত করে তিমিটি পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এই নীল তিমি এক নজর দেখতে স্থানীয়রা ছুটে আসছেন আশপাশ থেকে। সেখানে ভিড় জমেছে উৎসুক জনতার।
শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে সাগরের পানিতে মৃত অবস্থায় ভাসমান দেখে স্থানীয়রা। তখনও পুরোপুরি জোয়ারের পানি নেমে যায়নি। জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ায় পর পূর্ণ ভাটায় সাগরের বালুতটে পড়ে থাকা মৃত তিমি স্পষ্ট দৃশ্যমান হয়। পরে স্থানীয়রা জেলা, উপজেলা প্রশাসন বনবিভাগ এবং পরিবেশ অধিদফতরে খবর দেয়।
তবে মৃত তিমিটি পঁচন ধরায় গন্ধ ছড়াচ্ছে। সাগরের পানিতে ভাসতে ভাসতে মৃত তিমিটির সামনের অংশ বিকৃত হয়ে গেছে। তিমির শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। মুখের অংশ একেবারেই গলে গেছে।
সৈকতে মৃত তিমি মাছ ভেসে উঠার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভিড় জমায় দর্শনার্থীরা। এক নজর দেখতে অনেক দেশিবিদেশি লোকজন কক্সবাজার শহর থেকে সৈকতের ঐ পয়েন্টে ছুটে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর নবী বলেন, ‘লোকমুখে শুনে আমি সৈকতে গিয়ে দেখলাম মৃত তিমিটি পঁচে গেছে। দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে। এর গায়ের রং লালচে হয়ে গেছে।’
গভীর সাগরে বড় জাহাজের ধাক্কায় অথবা হত্যার কারণে তিমিটির মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বাংলাদেশের জলসীমার বাইরে তিমিটি মারা যেতে পারে বলেও ধারণা পরিবেশবাদীদের।
মেরিন লাইফ বিশেষজ্ঞ জহিরুল ইসলাম জানান, আনুমানিক ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী এ তিমিটি হয়ত ৫/৬ দিন আগে মারা গেছে। ৪৪ ফুট দীর্ঘ ও ২৬ ফুট প্রস্থ এ তিমিটি আনুমানিক আড়াই টন ওজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরিবেশবাদি সংগঠন সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন রিয়াদ জানান, মৃত তিমিটির আঘাতের চিহ্ন এবং গন্ধে অনুমান করা যাচ্ছে অন্তত এক সপ্তাহ আগে তিমিটি মারা গেছে। সাগরে ফেলা কোন রাসায়নিক বর্জ্য খাওয়ার পরে এ তিমির মৃত্যু হতে পারে। তাই মৃত তিমিটিও মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ মৃত তিমি পরিদর্শন শেষে বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি তিমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য সম্পদ অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে।
তিনি আরও বলেন, সাগরে লাখ লাখ প্রজাতির প্রাণীর বিচরণ। মাঝেমধ্যে কিছু কিছু প্রাণী মারা যাওয়াটা স্বাভাবিক। তবু কোন কারণে তিমিটি মারা গেছে, তা নির্ণয়ের চেষ্টা করা হবে।