রোজাদার আল্লাহ তায়ালার নিকট অতিপ্রিয় এবং অনন্য সম্মাননায় সিক্ত। স্বয়ং রাব্বুল আলামীন নিজেই রোজাদারদের প্রতিদান দিবেন বলে ঘোষণা করেছেন। এটাই একজন রোজাদারের নিকট সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি, প্রত্যাশা ও সফলতা। কিন্তু এ ছাড়াও রোজাদারের জন্য আল্লাহ তায়ালা পুরস্কার স্বরূপ প্রাত্যহিক দু’টি বিশেষ সময় নির্ধারণ করেছেন। সেগুলো হচ্ছে ‘সেহরি’ ও ‘ইফতার’। এ দু’টি সময় রোজাদারের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি মহিমান্বিত এবং প্রশান্তিদায়ক।
‘সেহরি’র বিশেষত্ব সম্পর্কে রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা সেহরি গ্রহণ করো। কারণ, সেহরিতে বরকত রয়েছে” (বুখারী শরীফ; সাওম অধ্যায়)। অন্য হাদিস শরীফে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেহরির ব্যাপারে সাবধানতার বাণী শোনাচ্ছেন, “সেহরির পুরোটাই বরকত। তা তোমরা ছেড়ে দিবে না” (মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল)। একই হাদিস গ্রন্থে ‘সেহরি’ গ্রহণকারীদের জন্য খোশ-খবর এসেছে এভাবে, “আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতাগণ সেহরি গ্রহণকারীদের উপর রহমত বর্ষণ করেন।”
রোজাদারদের জন্যে, সেহরির ন্যায় ইফতারেও রয়েছে বিশেষ নেয়ামত। ‘ইফতার’ প্রসঙ্গে প্রিয় নবীর মনোরঞ্জক ঘোষণা, “রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দ আছে। তন্মধ্যে একটি ‘‘ইফতারের সময়” (বুখারী শরীফ; কিতাবুস সাওম) কী দ্বারা একজন রোজাদারের ‘ইফতার’ করা উচিত তাও বলা হয়েছে হাদিস শরীফে।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমাদের কেউ যদি ইফতার করে, তার উচিত খেজুর দ্বারা ইফতার করা। কারণ, তাতে বরকত রয়েছে। যদি খেজুর না পাওয়া যায় তাহলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। কারণ, পানি পবিত্র।” (তিরমিযি শরীফ; যাকাত অধ্যায়)
ইফতারের ন্যায় সেহরিতেও ‘খেজুর’ গ্রহণের বিশেষ ফজিলত হাদিস শরীফে বিদ্যমান। আর অবশ্যই একজন রোজাদারের উচিত, ‘সেহরি’ বিলম্ব করা এবং ‘ইফতার’ তাড়াতাড়ি করা। এটা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অত্যন্ত পছন্দনীয় সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে বলেন, “আমাকে রোজার ইফতারে দ্রুত এবং সেহরিতে বিলম্ব করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে” (আস্ সুনানুন কুবরা লীল বায়হাকী)।
তবে অত্যধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যে, সেহরি সুবহে সাদিকের কিছুক্ষণ পর আর ইতফার সূর্যাস্তের কিঞ্চিৎ পূর্বেও যেন গ্রহণ না করা হয়। এতে রোজা ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশঙ্কা থাকে। এভাবেই দয়াবান আল্লাহ তায়ালা তাঁর অনুগত বান্দা-রোজাদারদের সেহরি ও ইফতারের মাধ্যমে বিশেষ নেয়ামত দানে সৌভাগ্যমণ্ডিত করেছেন। আর আমাদেরও উচিত, যথাসময়ে-যথানিয়মে সেহরি ও ইফতার গ্রহণ করে আল্লাহ তায়ালার দান এ বিশেষ নেয়ামত হাসিল করা এবং শুকরিয়া আদায় করা।