পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সারাদেশে যে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল শুরুর সেই দিনটিকে বিশেষভাবে স্মরণ করতে জগন্নাথ হলে প্রতি বছর ২৪ মার্চ রাতে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। কবে থেকে তার শুরু এবং কীভাবে এই মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচী সে বিষয় নিয়ে কথা বলেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে জাহানারা ইমামের সময়ই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গণহত্যা দিবস পালনের। আমাদের নানান দিবস আছে। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে যে গণহত্যা চালানো হয় সেটা ঠিকভাবে পালনের মতো কোনো দিবস নেই। পরে সেই রাতেই ঘোষণা দেওয়া হয় দিনটি বিশেষভাবে পালনের। সেই রাতেই মশাল জ্বালিয়ে এগোনো হয় কাছের বধ্যভূমি জগন্নাথ হলে।
২৪ বছর ধরে এভাবেই চলছে। প্রথম প্রথম আমরা একা একা পালন করতাম। সেই রাতে আগে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়, পরে মশাল প্রজ্বলন করা হয় এবং মশাল নিয়ে যাত্রা করে জগন্নাথ হলে গিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শহীদদের স্মরণ করা হয়।
শাহরিয়ার কবির আরো বলেন, আমরা আগে একা একা দিনটি পালন করতাম। এখন দেখি আরো অনেকে এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। তবে শুধু ঢাকাতেই বা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেই নয়, দিনটিতে যেখানে যেখানে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাখা আছে সেখানেই দিনটি পালন করা হয়। সঙ্গে শুধু বাংলাদেশের গণহত্যাই নয় সারাবিশ্বের আরো সব আলোচিত গণহত্যায় শহীদদের স্মরণ করা হয়।
একই কথা বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. অসীম কুমার সরকার।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯৩ সালের দিকে এই দিনটিতে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। পরবর্তীতে হলও শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে। বর্তমানে এই স্মরণীয় রাতটিকে ঘিরে কর্মসূচি আরো বাড়ছে। আগে অল্প কিছু মানুষ আসতো মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আর এখন আরো অনেকে আসছে।
এবছর জগন্নাথ হলে ২৪ মার্চ সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চলে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এছাড়াও সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় দেশাত্ববোধক গান, মশাল ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও আলোচনা সভা। গণহত্যায় শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পুরো জগন্নাথ হল অন্ধকার করে দেওয়া হয়। শ্রদ্ধা জানান হয়, মাটি দিয়ে তৈরি শহীদদের প্রতিকৃতিতে।