জীবনে চলার পথে একা থাকাটা বড় কঠিন। সামাজিক জীব হিসেবে প্রতিটি মানুষই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আরেকজনের উপর নির্ভরশীল হতে চায়। তবে অনেক সময় এর ব্যতিক্রমও আমরা দেখে থাকি। অন্যের উপর নির্ভর করার ক্ষেত্রে আমরা সর্বদা বিপরীত লিঙ্গটিকেই বেছে নিতে পছন্দ করি। আগ্রহটাও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বেশি থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আগ্রহটা কারো প্রতিই কাজ করে না। সেক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষ একাই জীবন যাপন করেন। যেটি তার জন্য খুব বেশি সুবিধার হয় না।
বিয়ে আমাদের দেশের একটি সামাজিক রীতি। বিয়ের মাধ্যমেই দুজন ভিন্ন লিঙ্গের মানুষ সমাজে এক সাথে থাকার স্বীকৃতি পেয়ে থাকে। তারপরও সমাজে সিঙ্গেল মানুষের অভাব নেই। আর সিঙ্গেল মানুষদের নিয়ে সমাজের অন্যান্য মানুষদের ভাবনার শেষ নেই। সিঙ্গেলদের ক্ষেত্রে তাদের কিছু ভ্রান্ত ধারণা সর্বদাই কাজ করে, যা বিরক্তিকর কারণ হয়ে উঠে।
সমাজে সিঙ্গেলদের নিয়ে যেসব ভ্রান্ত ধারণা চালু রয়েছে:
১. প্রত্যক সিঙ্গেল মানুষই কি একটি সম্পর্ক চান?:
প্রত্যেক সিঙ্গেল ব্যক্তিই কি একা না থাকার উপায়গুলির সন্ধান করেন? তারা কি একটি সম্পর্কের জন্য বেপরোয়া হয়ে পড়েন? সমাজের অধিকাংশ সিঙ্গেল মানুষকে নিয়েই এমন ধারণা চলমান। অথচ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমন ধারণাটি ভুল। কখনো কখনো হয়তো সত্য, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে সিঙ্গেল মানুষটি ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা করতে চাইছেন না, বা কারো সাথে থাকবেন না বলেই সম্পর্কে যেতে চান না।
এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় রয়েছে যে আপনি যদি সিঙ্গেল হোন, তবে আপনি একাকীত্ব বোধ করবেন। কেননা আপনি সম্পর্কে যুক্ত হতে চান না। সেক্ষেত্রে সমাজের মতে, যদি আপনি কোন সম্পর্ক না করেন তবে আপনি একেবারেই একা হয়ে পড়বেন। সেখানে আপনি ভালো বন্ধু, পরিবার এবং অন্যান্য শুভাকাঙ্খীকে সব সময়ে কাছে পাবেন না।
৩. সিঙ্গেল মানুষের কিছু ব্যক্তিগত বিষয় আছে:
যদি আপনি সিঙ্গেল হন, তবে আপনার নিশ্চয় কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা আছে বলে মনে করবেন অনেকে। অতি ইচ্ছুকরা হয়তো তার সমাধান দিতেও এগিয়ে আসবেন। আর যদি আপনি সমকামী হন (যা এখনও একটি ‘সমস্যা’ হিসাবে বিবেচিত) অথবা আপনি কোনকিছু নিয়ে ট্রমাতে আছেন যার ফলে আপনি প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন একা থাকার। তবেতো সেই সিঙ্গেল মানুষটিকে নিয়ে সমাজে সকলের মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যাবে।
৪. সুন্দর ব্যক্তিও কি সিঙ্গেল হয়?:
‘আপনি তো সুন্দর, তবে একা কেন?’ কিংবা ‘আপনার মত এমন সুদর্শন ব্যক্তির নিশ্চয় অনেক বন্ধু/বান্ধবী?’ এটি সমাজের প্রায় অধিকাংশ মানুষেরই ধারণা। বেশকিছু সুদর্শন ব্যক্তিদের মধ্যে গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের অনেকেই সুদর্শন হওয়ার পরেও সিঙ্গেল জীবন যাপন করছেন। কারণ, তারা পছন্দ সই জীবনসঙ্গী খুঁজে পাননি।
সিঙ্গেল মানুষদের নিয়ে অনেকেরই এই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে, তারা নিজেরা সিঙ্গেল বলে অন্যের সম্পর্ক নিয়ে ঈর্ষা করেন। নিজে সম্পর্কে জড়াতে পারছেন না এমন বিষণ্নতা থেকে ঈর্ষা কাজ করে। কিন্তু এটাও ঠিক নয়। অনেক সিঙ্গেলের মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সিঙ্গেল মানুষ অন্যের সম্পর্ক নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই। ঈর্ষাতো দূরের কথা।