ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণে ৪২ লাখ ভোটের মধ্যে দু’ প্রার্থী মিলে সাড়ে তিন হাজার ভোট পেলেও বাম নেতারা বলছেন, জনগণ তাদের সঙ্গে আছে। পেশীশক্তি এবং কালোটাকার প্রভাবে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি বলে দাবি তাদের।
রাজধানীর দু’ করপোরেশনে সিপিবি-বাসদ সাবেক দু’ ছাত্রনেতাকে সমর্থন জানিয়েছিলো। তাদের একজন ছাত্র ইউনিয়নের রমরমা সময়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা। আরেকজনও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একসময়ের পরিচিত মুখ।
কিন্তু উত্তরে সিপিবির আবদুল্লাহ আল ক্বাফি রতন পেয়েছেন মাত্র দুই হাজার ৪৭৫ ভোট, দক্ষিণে বাসদ-এর বজলুর রশীদ ফিরোজ এক হাজার ২৯। উত্তরে সাড়ে ২৩ লাখ এবং দক্ষিণে প্রায় ১৯ লাখ ভোটারের হিসাবে তাদের পাওয়া ভোট ক্ষুদ্র ভগ্নাংশের মধ্যেও পড়ে না বলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইসির হিসাবে ঐতিহ্যবাহী দল হিসেবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কখনোই কোনো নির্বাচনে এতো কম ভোট পায় নি। ৮৬’র জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের ছয়জন এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৯১’র নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন পাঁচজন। আর ৯৪’র ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তাদের ভোট মোটামুটি ভোট ছিলো।
তোপখানা-পল্টনের বামপাড়ায়ও বলাবলি হচ্ছে, এতোটা লজ্জা তাদের কখনও পেতে হয়নি।
তবে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেছেন, তারা প্রহসনমূলক এই নির্বাচন প্রত্যাখান করেছেন। কারণ নির্বাচনে জনগণের রায় প্রতিফলিত হয়নি।
‘নির্বাচনে যা হয়েছে তা ছিলো টাকা ও পেশিশক্তির খেলা,’ এরকম মন্তব্যের সঙ্গে তিনি বলেন, নিজেদের পক্ষে রায় নেওয়ার জন্য ভোট কেন্দ্রগুলো থেকে সরকারি দলের বাইরে অন্য সব দলের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়। টাকার জোরে তারা জনগণের রায় অন্যদিকে নিয়ে গেছে।
জনগণের জন্য রাজপথে আন্দোলন করার পরও তাদের সমর্থিত প্রার্থীদের ভরাডুবি কেনো, এমন প্রশ্নের উত্তরে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, জনগণ তাদের সঙ্গে রয়েছেন। ‘তারা ক্ষমতা ও টাকার কাছে হেরে গেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির টাকা ও পেশিশক্তির জন্য নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও ছিলো দলীয়। তাই তারা নির্বাচন প্রত্যাখান করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
তবে নির্বাচনে সফল হতে সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটানোর কথাও বলেছেন এক সময় সারাদেশে ক্ষেতমজুর সমিতি সংগঠিত করে আলোড়ন তোলা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।