গাজীপুরের সানাউল্লাহ নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সবাইকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দেন।
আজকের রায়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ারা হলেন- কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, আতিকুল ইসলাম, সেলিম শেখ, নয়ন শেখ ও আনোয়ার হোসেন শেখ।
আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ারা হলেন- আবদুল মোতালেব ও শামসুদ্দিন। তবে হাইকোর্টের এই রায়ের আগেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১ জন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর ১ জন মারা যান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবুল হোসেন, গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, আমিনুল ইসলাম ও মোসলেম উদ্দিন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, এই মামলায় কোনো আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী ছিল না এবং ঘটনার কোনো চাক্ষুষ সাক্ষিও ছিল না। কেবল মাত্র পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রায় দেন বিচারিক আদালত। এমনকি যে পদ্ধতিতে পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল, সেটাও করা হয়নি। এসব বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে কাপাসিয়ার ঘাগুটিয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে সানাউল্লাহ সরকার বাড়ি থেকে রিকশায় করে পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার নারান্দী গ্রামে যাচ্ছিলেন। পরদিন সকালে স্থানীয় সিঙ্গুয়া ফকির সাহাব উদ্দিন বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে গলায় মাফলার পেঁচানো অবস্থায় সানাউল্লাহর লাশ পাওয়া যায়।
ওই ঘটনায় করা করা মামলায় গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফজলে এলাহী ভূইয়া ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড ও এক নারী ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
পরবর্তীতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। সে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।