ঘরের মাঠে হারের বৃত্তেই ঘুরছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বন্দরনগরীতে খুলনার কাছে হারার পর সিলেটের সঙ্গে জয় পেলেও ধারাবাহিকতায় ব্যর্থ হল চ্যালেঞ্জার্সরা। কুমিল্লার পর সাকিব-মুজিবের ঘূর্ণিতে ধরাশায়ী হল নাঈম ইসলামের দল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ফরচুন বরিশালের ব্যাটারদের ওপর ছড়ি ঘোরান মৃত্যুঞ্জয় ও শরিফুল ইসলাম। জবাবে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেলেও মিরাজ-নাঈমদের ভিত নড়িয়ে দেন বরিশালের দুই স্পিনার সাকিব ও মুজিবুর। ১৪৯ রানের জবাবে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানে থামে চট্টগ্রাম।
১৪ রানের জয় পাওয়ার দিনে ব্যাট-বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে দলের চাপের মুহূর্তে খেলেন আসরের প্রথম ফিফটি। দলকে গড়ে দেন দারুণ এক ভিত। তবে সাকিবের গড়া ভিত বেশি দূর টানতে ব্যর্থ হন বরিশালের বাকি ব্যাটাররা।
ইনিংসের শুরুতেই শরিফুল ইসলামের তোপে ফেরেন মুনিম শাহরিয়ার। ধাক্কাটা ভালোই সামলে ক্রিস গেইল ও নাজমুল হোসেন শান্ত গড়েন দারুণ জুটি। তবে তারাও দলকে ভালো অবস্থা পৌঁছে দিতে পারেননি। ১৯ বলে ৩ ছক্কা ও এক চারে ২৫ রান করেন ইউনিভার্স বস। ২৯ বলে ২৮ রান করে ফেরেন শান্ত।
এরপর তৌহিদ হৃদয়ের ২২ রান বাদে আর কেউই যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি চারে নামা সাকিবকে। অধিনায়ক ৩১ বলে ফিফটি পূর্ণ করে মৃত্যুঞ্জয়ের শিকার হন। ব্যর্থ হন ব্রাভো, ইরফান শুক্কুর, নুরুল হাসানরা। শেষ পর্যন্ত ১৯.১ ওভারে ১৪৯ রানে বরিশালকে গুটিয়ে দেয় নাঈম ইসলামের দল।
ফরচুন বরিশালের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে দুর্দান্ত বোলিং প্রদর্শনী দেখান শরিফুল ইসলাম ও আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক করা বোলার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ২.১ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচায় দুটি উইকেট নেন শরিফুল। ২ ওভারে ১২ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নেন মৃত্যুঞ্জয়। মেহেদী মিরাজ পেয়েছেন একটি উইকেট।
জবাবে প্রথম ওভারেই চট্টগ্রামের ওপেনার উইল জ্যাককে শূন্য রানে ফেরান মুজিব-উর-রহমান। আফগান রহস্য স্পিনার পরে শিকার করেন বেনি হাওয়েল ও আকবর আলীকে। কোটার ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে খরচ করেন মাত্র ৯ রান।
মুজিবের দুর্দান্ত দিনে ঘুর্ণির দাপট দেখান সাকিবও। ম্যাচ সেরা হওয়া অধিনায়ক ২৩ রান খরচায় নেন তিনটি উইকেট। চট্টগ্রামকে গুটাতে ব্রাভো, রানা নেন দুটি করে উইকেট।
চট্টগ্রাম ঘরের মাঠে জয়ের খোজে ভালো শুরু না পেলেও দ্বিতীয় জুটিতে ৭০ রান যোগ করেন আফিফ ও শামিম। ৩২ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৯ রান করেন ওপেনে নামা আফিফ। তিনে নামা শামিম খেলেন ৩০ বলে ২৯ রানের ইনিংস।
চ্যাডউইক ওয়ালটন সাকিবের শিকার হওয়ার আগে ১৮ বল খেলে করেন ১৬ রান। মিডল অর্ডার পুরোটাই ধ্বসে পড়ে সাকিব-মুজিব ঘুর্ণিতে। শেষ দিকে মিরাজের ১৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস চ্যালেঞ্জার্সদের আশা জাগালেও তা থামিয়ে দেন ব্রাভো।
সাবেক বনে যাওয়া চট্টগ্রাম অধিনায়ক ইনিংসে হাঁকান তিনটি চার ও একটি ছক্কা। শেষ দিকে টেলএন্ডাররা হাত খুলে মারতে গেলেও তাদের থামিয়ে দেন মেহেদি হাসান রানা ও ব্রাভো। ১৪ রানের জয় তুলে নেয় বরিশাল।