Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

সকলের অন্তর ভালোবাসায় পূর্ণ হোক

প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে বিজাতীয় শাসনের দাপটে বাঙালি পরিচয় হারাতে বসেছিলাম আমরা। সেই দুঃখদিনে কিছু বাঙালি এই বটমূলে জড়ো হয়ে বাঙালির গান আর কবিতা আবৃত্তি করে বাঙালিকে তার ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দিলো। নববর্ষের সেই প্রভাত বাঙালির চেতনা ফিরিয়ে আনলো। বটমূলে মিলিত হয়ে বাঙালি আপন জাতিসত্তার পরিচয়ে সমৃদ্ধ হলো।

সাংস্কৃতিকভাবে শুধু নয়, পূর্ব-পশ্চিমের অর্থনৈতিক বৈষম্য অনুধাবন করে পূর্ববাংলা ফুঁসে উঠল। তারপর স্বাধীনতার জন্যে কত রক্তপাত, নারীত্বের-মনুষ্যত্বের কত অবসাননার ভিতর দিয়ে এল প্রিয় স্বাধীনতা। তার পরেও হত্যার রাজনীতিতে দেশপ্রেমিকদের হটিয়ে বাঙালিত্বে অবিশ্বাসীরা শাসন ক্ষমতা দখল করল। এত ওঠাপড়ার পরেও অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে উন্নয়নের মুখ দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ।

কিন্তু ধর্মের নামে গোপন ষড়যন্ত্রের বিরাম নেই। ক্ষমতা দখলের জন্যে জ্বালাও-পোড়াও নীতির নিষ্ঠুর লীলা অব্যাহত রয়েছে। যে-ধর্ম আমাদের আশ্রয় স্বরূপ, যে-ধর্ম আমাদের ধারণ করে রেখেছে, তার অপব্যাখ্যা দিয়ে যুক্তিবাদী বিজ্ঞানসচেতন মানুষদের হত্যা করা শুরু হলো। বিভ্রান্ত মানুষ আজ যেনো শিশুহত্যা আর নারী নির্যাতনে মেতে উঠেছে। ধর্মের রজনীতিতে শাসনের গদিতে বসবার লোভের সঙ্গে যোগ দিয়েছে নানা অন্যায় লোভ।

এতে দেশের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। আসুন, এই ঐতিহাসিক বটমূলে আজ ১৪২৩ সালের পহেলা বৈশাখে আমরা মানবতা উদ্বোধনের কাজ করবার শপথ নিই। সৃষ্টিশীল কাজের ভিতর দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যাই।

মানবিক সমাজ গড়ে তুলবার পবিত্র দায়িত্ব মাথায় তুলে নিই। দেশের মানুষদের জন্য সকলের অন্তর ভালোবাসায় পূর্ণ হোক। জয় হোক মানবতার। শুভ নববর্ষ।
( শুভেচ্ছা কথন ১লা বৈশাখ ১৪২৩, ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, বটমূল, রমনা, ঢাকা)

Exit mobile version