প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের জন্য মোস্তাফিজের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ‘কাটার’। যদিও কাটার ত্রাস ছড়াচ্ছে না আগের মতো ভয়াল হয়ে, তবে এখনও দুর্বোধ্যই বটে। ত্রিদেশীয় সিরিজে মূলঅস্ত্র কতটা ছুঁড়তে পারবেন ফিজ? এমন প্রশ্ন আসছে কুয়াশাকে কেন্দ্র করে। যার কারণে মাঠে থাকবে শিশিরের প্রকোপ। ভেজা বল কতটা গ্রিপ করতে পারবেন মোস্তাফিজ, সেটি নিয়েই যত সংশয়!
ওয়ানডে দলে মোস্তাফিজুর রহমানের আগমনের পর ঘরের মাঠে টানা তিনটি সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। প্রতিটি সিরিজেই বাঁহাতি পেসার রেখেছিলেন একচ্ছত্র অবদান। ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক সিরিজের তিন ম্যাচে ১৩ উইকেট। পরে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫টি আর জিম্বাবুয়ের সঙ্গে নেন ৮ উইকেট। সবগুলোই ছিল তিন ম্যাচের সিরিজ। ঘরের মাঠে মোস্তাফিজ পারফর্ম করেছে কিন্তু দল হেরেছে, এমন হয়েছে খুব কমই। নিজেদের মাটিতে সবশেষ সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে (২-১) যাওয়ার সময় ইনজুরির কারণে দলেই ছিলেন না ফিজ। পরিসংখ্যান বলছে, সোমবার শুরু হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে জিততে চেনারূপেই পেতে হবে কাটার মাস্টারকে।
সোমবার বেলা ১২টায় শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নামবে মাশরাফীবাহিনী। জেঁকে বসা শীতের ঘন কুয়াশার কথা চিন্তায় রেখেই এগিয়ে আনা হয়েছে ম্যাচ শুরুর সময়। ম্যাচের আগেরদিন রোববারও ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে ছিল হোম অব ক্রিকেট। শিশিরের প্রভাব ভেদ করে নিজেকে কতটা মেলে ধরতে পারবেন ফিজ, সেটার অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার দিনে টস ভাগ্য গড়ে দিতে পারে ম্যাচের ব্যবধান। সেটি মাথায় রাখছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফীও। তবে সিদ্ধান্ত কী হবে সেটি ছেড়ে দিচ্ছেন ওই সময়ের আবহাওয়ার উপরই, ‘আমরাও দ্বিধায় আছি, আগে ব্যাটিং করলে ভাল নাকি বোলিং করলে। ভারী কুয়াশা পড়লে খুব একটা শিশির পড়বে না। শিশির বেশি না পড়লে বোলিংটা ভাল হয়। তাই নির্দিষ্ট দিনে আবহাওয়া কেমন থাকছে সেটার উপরই ব্যাপারটা নির্ভর করছে।’
আবহাওয়ার পরিস্থিতি বা টসের ফল যাই হোক, ম্যাচ জিততে মাশরাফী মাঠে পরিকল্পনার যথাযথ প্রয়োগ চান, ‘কাল টস জিতলে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে এটা নিয়ে না ভেবে আমরা শুরুতে ব্যাটিং কিংবা বোলিং যাই পাই, সেটায় পরিকল্পনার বাস্তবায়নটা হবে গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় না, ব্যাটিং-বোলিং ওরকম কোন পার্থক্য তৈরি করবে। কোন পার্থক্য হলেও তা কমানোর মতো সামর্থ্য আমাদের আছে। সেদিকেই নজর থাকা গুরুত্বপূর্ণ।’
কন্ডিশন দেখে প্রশ্ন এসে যায় সোমবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কয় পেসার নিয়ে নামবে বাংলাদেশ? মাশরাফী বললেন, ‘অতীতে চারজন নিয়ে খেলে সফল হয়েছি। পরে তিন পেসারের কম নিয়ে খেলিনি। পেস বোলারদের উপর সবসময় একটা আস্থা আমরা রেখেছি। হয়তবা অনেক সময় আমরা পেসাররা ডেলিভার করতে পারিনি। আবার যখন ডেলিভার করতে পেরেছি সেই ম্যাচগুলো আমরা জিতেছি। আবার যখন পারিনি আমাদের কারণেও ম্যাচ হেরেছি। পেসারদের উপর আস্থা সবসময়ই ছিল। কিন্তু কয়েকটি সিরিজে ধারাবাহিকতা ছিল না। এখনও অবশ্যই আস্থা আছে। আশা করছি ধারাবাহিকতাও আগের মতো ফিরে আসবে।’
স্কোয়াডের মূল তিন পেসার মাশরাফী, মোস্তাফিজ ও রুবেল হোসেন একসঙ্গে বোলিং অনুশীলন করলেন সেন্টার উইকেটের পাশে। ত্রয়ীর সঙ্গে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একাদশে যোগ হতে পারেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার আবুল হাসান রাজু ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের মধ্যে একজন। আর সাকিবের সঙ্গে স্পিন আক্রমণে সানজামুল না মিরাজ সঙ্গী হবেন সেটি জানা যাবে টসের পরই।
ছবি: সাকিব উল ইসলাম