প্রথম ইনিংস শেষে যতটা সহজ মনে হয়েছিল, ততটা সহজে জিততে পারল না চট্টগ্রাম ভাইকিংস। কাজটা আগেই সেরে রেখেছিলেন বোলাররা, বাকি কাজটা অনায়াসের বদলে ঘাম ঝরিয়ে করতে হল ব্যাটসম্যানদের। উদ্বোধনী ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলের ষষ্ঠ আসর শুরু করেছে বন্দরনগরীর দল চট্টগ্রাম।
১০০ রানের কম লক্ষ্য টপকাতেও ৭ উইকেট হারাতে হয় ভাইকিংসদের। ম্যাচও গড়ায় শেষ ওভার পর্যন্ত। দুদলের ইনিংস লো-স্কোরিংয়ের হলেও জমজমটা বিপিএলের বার্তাই দিয়ে রাখল শুরুটুা।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামের বোলিং তোপে মাত্র ৯৮ রানে অলআইট হয় রংপুর। ছোট লক্ষ্য ৩ উইেকট আর ৫ বল হাতে রেখে টপকে যায় ভাইকিংসরা।
প্রতিপক্ষকে একশ’র আগে অলআউট করে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিল চট্টগ্রাম। প্রথম আড়াই ওভারে ১৫ রান তুলে ফেলে তারা। কিন্তু মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা যে প্রতিপক্ষ বোলার। ব্যাট হাতে ভালো কিছু করতে পারেননি, তাই বলে নিজের প্রধান কাজ বল হাতে পারবেন না তা কী হয়!
ইনিংসের তৃতীয় আর নিজের করা দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য এনে দেন ম্যাশ। অ্যালেক্স হেলসের ক্যাচ বানিয়ে অধিনায়ক ফেরান ক্যামেরন ডেলপোর্টকে (৮)।
দ্বিতীয় সাফল্য পেতেও দেরি হয়নি রংপুরের। আশার ফুল ফোটাতে ব্যর্থ হন মোহাম্মদ আশরাফুল। চতুর্থ ওভারেই শফিউল ইসলামের বলে ফেরেন তিনি। পাঁচ বছর পর বিপিএলে ফিরে রাঙাতে পারলেন না শুরুটা।
দ্রুত দুই উইকেট হারালেও ক্রিজে ছিলেন আফগানিস্তান তারকা মোহাম্মদ শাহজাদ। প্রথমে একটু ধীরস্থির থাকলেও আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বলের উপর সতর্ক নজর রেখে শাহজাদকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
যদিও বেশি সময় থাকতে পারেননি আফগান উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। ২৩ বলে ২৭ করে বিনি হাওয়েলের বলে এলবিডব্লিউর হন শাহজাদ।
রানের ধীর গতির সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে চট্টগ্রাম। দলীয় ৬০ রানের মাথায় ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটের খাড়ায় কাটা পড়েন সিকান্দার রাজা। ১৩ বল খেলে মাত্র এক করতে পারেন জিম্বাবুইয়ান এ ব্যাটসম্যান।
এরপর ২ রান করে মোসাদ্দেক হোসেন ফিরে গেলে ৩৭ রান দূরে থাকতেই অর্ধেক ব্যাটসম্যানকে হারায় চট্টগ্রাম।
অন্যদের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্তে বরফের মতো জমে থাকেন মুশফিক। উইকেট ধরে রাখার সঙ্গে রানরেটেও নজর রাখেন। নাঈম হাসানকে নিয়ে ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ১৬তম ওভারে নাঈমকে বোল্ড করেন আবারও ত্রাতা মাশরাফী।
একের পর এক উইকেট গেলেও দলের আশা টিকিয়ে রাখেন মুশফিক। শেষ করে আসতে পারেননি। নাজমুল হাসান অপুর বল লেগসুইপে উড়িয় মারতে গিয়ে ফেরেন সাজঘরে। ৩১ বলে ২৫ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে যান অধিনায়ক।
১৮তম ওভারে আরেকটি উইকেট নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। তবে সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টার পরও ফ্রেইলিঙ্কের ক্যাচ হাতে জমিয়ে রাখতে পারেননি সোহাগ গাজী। সানজামুল ইসলামকে (৭) সঙ্গে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন বল হাতে আগুন ঝরানো ফ্রেইলিঙ্ক (১২)।
চার ওভারে ২৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে রংপুরের সেরা বোলার মাশরাফী। অন্য চার বোলারের প্রত্যেকে নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে একশ রানের আগেই গুটিয়ে যায় রংপুর রাইডার্স।