পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার লংগদুতে পাহাড়িদের বাড়িঘরে ‘আগুন সন্ত্রাসের’ ভীতিকর ঘটনাটি অস্ট্রেলিয়ার সংসদে উত্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান গ্রিন পার্টির সিনেটর লী রিয়ানন।
তিনটি পাহাড়ি গ্রামের ২৪০টি পাহাড়ির ঘরে অগ্নিসংযোগ ও সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার সংসদ ভবনের সামনে এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তিনি এই ঘোষণা দেন।
চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস ইন্ডিজিনাস জুমা এ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর, মানবাধিকার কর্মী, সংস্কৃতি কর্মী, লেখক, সাংবাদিকসহ প্রায় ৭০ জন বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসী বাংলাদেশি।
সমাবেশ থেকে লংগদু ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন ও মুক্তিযুদ্ধের মূল নীতি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য দেশের পাহাড়ি আদিবাসীসহ সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।
তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনসহ যারাই এ ঘটনার পিছনে জড়িত তাদের শাস্তি দাবি, ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিপূরণ ও পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন দাবি করেন ।
সিনেটর রিয়ানন বাংলাদেশের আদিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসার আহবান জানান। রিয়ানন প্রতিবাদ সমাবেশে ঘোষণা দিয়ে বলেন, তিনি লংগদুর ঘটনাটি অস্ট্রেলিয়ান সংসদের আলোচনায় তুলবেন।
প্রতিবাদ শেষে ১০৭ জন বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত স্মারকলিপি বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।
গত ২ জুন (২০১৭) মোটর সাইকেল চালক যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলামের হত্যার প্রেক্ষিতে লংগদুর তিনটি গ্রামে পাহাড়ি আদিবাসীদের বসতিতে সেটেলাররা আগুন লাগিয়ে দুই শতাধিক বাড়ি ভস্মীভূত করে দেয়। হাজার খানেক আদিবাসী জীবন বাঁচাতে জঙ্গলে পালালেও গুনেবালা চাকমা নামে একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধা অগ্নিসংযোগের সময় মারা যান। নিরাপত্তাহীনতা ও গৃহহীনতার কারণে তারা এখনও খোলা আকাশের নীচেই বাস করছেন ।