চলতি আসরে দুই দলের জয় সমান দুটি করে। শুধু গোল ব্যবধানে রিয়াল মাদ্রিদের থেকে পিছিয়ে টটেনহ্যাম হটস্পার। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সুযোগ ছিল দুদলেরই, পয়েন্ট বাড়িয়ে নেয়ার। কিন্তু মরিসিও পচেত্তেনি ও জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা পয়েন্ট ভাগাভাগির বেশিকিছু এনে দিতে পারেনি দলকে।
হুগো লরিস নামক এক দেয়ালে বারবার আটকা পড়ে নিজেদের মাঠে এক পয়েন্ট নিয়েই খুশি থাকতে হয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের। টটেনহ্যাম হটস্পারের সঙ্গে যে ১-১ গোলে ড্র করেছে রিয়াল। রোনালদো-বেনজেমাদের দারুণ কিছু শট ঠেকিয়ে স্পারদের নায়ক গোলরক্ষক লরিস। আর রিয়ালের নায়ক রোনালদো, তার মূল্যবান এক গোলই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘরের মাঠে টানা অপরাজিত থাকার সংখ্যাটি ১৭ ম্যাচে নিয়েছে রিয়াল।
মঙ্গলবার রাতে পয়েন্ট হারালেও অবশ্য টেবিলের শীর্ষেই থাকছে রিয়াল। দুইয়ে থাকা টটেনহ্যামের সমান ৭ পয়েন্ট হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে রোনালদোর দল। ‘এইচ’ গ্রুপের রাতের অন্য ম্যাচে অ্যাপোয়েল নিকোশিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করা বরুশিয়া ডর্টমুন্ড তৃতীয় স্থানে আছে।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শুরু থেকেই বলের দখল রেখে টটেনহ্যাম রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করেছেন রোনালদো-মডরিচরা। ডানপ্রান্ত থেকে আক্রমণ ভাগে বলের যোগান দিয়েছেন রিয়ালের তরুণ রাইটব্যাক আশরাফ হাকিমি। তার ক্রসে রোনালদোর হেড পোস্টে লেগেছে শুরুতেই। ১৭ মিনিটে তার পাস থেকেই রোনালদোর শট টটেনহ্যামের রক্ষণ কাঁপিয়ে চলে গেছে বাঁ-বারের গা ঘেঁষে।
বলের দখল ঠিক মত না পেলেও পাল্টা আক্রমণ করতে ছাড়েনি টটেনহ্যাম। ২০ মিনিটে এরিকসেনের কর্নার কিক থেকে হ্যারি কেনের মাথা ছোঁয়া গোলা কোনরকমে ফিরিয়ে দিয়ে স্বাগতিকদের বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক কেইলর নাভাস।
সেই গোল না পাওয়াটাই যেন তাঁতিয়ে দিয়েছিল টটেনহ্যামকে। ক্রমেই তারা বলের দখল বাড়িয়েছে, শানিয়েছে আক্রমণ। ২৮ মিনিটে তেমনই এক আক্রমণে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। বামপ্রান্ত থেকে সার্গেই অঁরিয়ের ক্রসে আসা বলে হ্যারি কেন ব্যাকহিল করতে গেলে ঠিকমত পা লাগাতে পারেননি। সেটি রাফায়েল ভারানের গায়ে লেগে জড়িয়ে যায় স্বাগতিকদের জালেই।
পিছিয়ে পড়ে গোলের জন্য মরিয়া রিয়াল সমতা প্রায় ফিরিয়ে ফেলেছিল ইস্কোর বদান্যতায়। ৩২ মিনিটে স্বাগতিক স্ট্রাইকারের জোরাল শটটি ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়েছেন স্পার গোলরক্ষক লরিস।
বিরতির মিনিট দুয়েক আগে স্বাগতিকদের সমতার আনন্দের ভাসান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সম্মিলিত এক আক্রমণের সময় বিপজ্জনক গতিতে এগোনো টনি ক্রুসকে বাজেভাবে ট্যাকল করে রিয়ালকে পেনাল্টি উপহার দেন স্পার ডিফেন্ডার অঁরিয়ের। সেখান থেকে স্পট কিকে ৪৩ মিনিটে গোল করেন রোনালদো।
চলতি আসরে রোনালদোর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোল হল ৫টি। প্রথম দুই ম্যাচে দুটি করে গোল ছিল তার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও বেশ গোছানো ফুটবল খেলেছে জিদানের দল। ৫৩ মিনিটে লরিস বাধা হয়ে না দাঁড়ালে এগিয়ে যেতে পারত রিয়াল। কাসেমিরোর উড়িয়ে মারা ক্রস থেকে বেনজেমার মাথা ছোঁয়া বল দারুণভাবে ফিরিয়েছেন স্পারদের ফরাসী গোলরক্ষক।
ম্যচের ৬৩ মিনিটে লরিসেই আবারও আটকে গেছে রিয়াল। পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া রোনালদোর বুলেট গতির শট হাত ছুঁয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন স্পার গোলরক্ষক। দুই মিনিট পরেই রোনালদোর আরেকটি মাটি কামড়ানো শট আটকে দিয়েছেন লরিস।
কিছুপর এগিয়ে যাওয়ার দুর্দান্ত সুযোগ হারিয়েছে টটেনহ্যামও। ৭১ মিনিটে ফার্নান্দো লরেন্তের রক্ষণচেরা পাস বামপ্রান্তে খুঁজে পায় হ্যারি কেনকে। সেই পাসে নেয়া ইংলিশ ফরোয়ার্ডের শট কোনরকমে ঠেকিয়ে দেন নাভাস। দুই মিনিট এরিকসেনের শট নাভাস দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দিলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই খুশি থাকতে হয়েছে দুদলকে।