প্রথম ইনিংস খুব একটা খারাপ না বাংলাদেশের ব্যাটিং। দ্বিতীয় ইনিংসে ‘অজানা কারণে’ কেমন যেন বেশি বিবর্ণ হয়ে যান ব্যাটসম্যানরা। এই সমস্যা নিয়ে বারবার আলোচনা করেও সমাধান খুঁজে পায়নি টাইগাররা। হায়দরাবাদে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার সময় তাই ঘুরেফিরে ভৌতিক অতীতের কথাই সবার আগে সামনে আসছে।
এই ম্যাচ জিততে হলে বাংলাদেশকে মোটামুটি ‘অসাধ্য সাধন’ করতে হবে। কেননা ভারতের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার সাফল্যটি ৩৮৭ রানের। চেন্নাইতে ২০০৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত নিজেরাই ঘরের মাঠে রান তাড়ার রেকর্ডটি গড়েছিল। যেখানে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসটিই ৪০০ রানের। নিজেদের প্রথম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে এই রান ছুঁয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর আর দলটির বিপক্ষে এত রান তোলা সম্ভব হয়নি। এবার অসাধ্য সাধনের পালা!
নিউজিল্যান্ড সফরে দ্বিতীয় ইনিংসের সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দেয় বাংলাদেশ শিবিরে। দুই টেস্টেই দ্বিতীয় ইনিংসে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে মুশফিকরা। ঐতিহাসিক এই টেস্টে বাংলাদেশ কত পথ পার হতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এর আগে মিরাজকে হারিয়ে দিন শুরু করে বাংলাদেশ। পরে সেঞ্চুরি পান মুশফিক। মাঝখানে কোহলির আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং পজিশন। যার সামনে বোলার তাসকিন ব্যাটসম্যান হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন। আরেক প্রান্ত থেকে মুশফিক স্কোরটা ৩৮৮ পর্যন্ত টেনে নিয়ে থামেন। ২৯৯ রান পিছিয়ে থেকে থামতে বাধ্য হয় বাংলাদেশও।
কোহলি ফলোঅন না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাটে নেমে পড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৫৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন তিনি।
সকালে আগের দিনে করা ৫১ রানে মিরাজ ফিরে গেলে তাসকিনকে নিয়ে শুরু হয় অধিনায়ক মুশফিকের লড়াই। তরুণ সতীর্থকে বারবার পরামর্শ দিতে থাকেন। অন্যদিকে কোহলি বারবার ফিল্ডিং পরিবর্তন করে বিভ্রান্ত করতে থাকেন। শর্ট স্লিপে প্রথমে ছিল দুইজন। পরে তিনজন। শর্টঅফে একজন। লেগ সাইডেও একজন। এমন আক্রমণাত্মক ফিল্ডিংয়ের সামনে তাসকিন তবু ৩৫টি বল খেলেন। শেষ পর্যন্ত জাদেজার একটি বল ব্যাটের কানা নিয়ে শর্ট স্লিপে চলে যায়। ওঁৎ পেতে থাকা রাহানে ক্যাচ লুফে নেন।
ভারত প্রথম ইনিংসে ৬৮৭ রান তোলার পর ‘ডিক্লেয়ার’ করে। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায়। পরে সাকিব-মুশফিক ১০৭ রানের জুটি গড়লে কিছুটা স্বস্তি ফেরে। এরপর মিরাজকে নিয়ে টাইগার দলপতি নিরাপদে দিন পার করেন। কিন্তু চতুর্থ দিন সেই ছন্দ আর ধরে রাখতে পারেননি।