কে হচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, সারাবিশ্বের কাঙ্ক্ষিত দৃষ্টিত ছিলো মার্কিন নির্বাচনের দিকে। ৩ নভেম্বর নির্বাচন হয়ে গেলেও ভোট গণনায় দেখা দেয় ধীর গতি। কারণ, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার ১০ লক্ষাধিক ভোট পড়েছে ডাকযোগে। সেই ভোট গণনাতেই মূলত যতো বিলম্ব। চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে বসলেন। যদিও তখনো প্রায় ১০ লাখ ভোট গণনা বাকি। তিনি ভোট গণন বন্ধেরও দাবি জানালেন। কিন্তু ভোট গণনা বন্ধ থাকেনি। নির্বাচনের চারদিন পর অবশেষে এলো কাঙ্ক্ষিত ফল। ফলাফলে দেখা যায়, ট্রাম্প নন বিজয়ী হয়েছেন জো বাইডেন। ডেমোক্র্যাটদের হাতে গেছে আগামী চার বছরের মার্কিন ক্ষমতার নাটাই। স্পষ্ট ব্যবধানে হেরে গেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিবিসির হিসাব অনুযায়ী, ৪৬টি অঙ্গরাজ্যের মধ্য থেকে ২৭৯টি ইলেকটোরাল ভোট জিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন গত ৩৩ বছর ধরে এই দিনের জন্য প্রতীক্ষায় থাকা জো বাইডেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি ভোট।
কিন্তু কেন হারলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প? ট্রাম্পের হারার কারণ জানার চেষ্টা করেছে চ্যানেল আই অনলাইন-
বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাস
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও বিভিন্ন গণমাধ্যম ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় এবং জো বাইডেনের বিজয়ী হওয়ার পেছনে কোভিড-১৯ মহামারীকেই মূল কারণ হিসেবে দেখছেন। মহামারীর সময় ট্রাম্পের বিরূপ আচরণ তাকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। মহামারীর শুরুতে ডোনাল্ড পাত্তাই দেননি। শুরু থেকে এই মহামারীকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সরাসরি মাস্ক বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞদেরও এক হাত নিয়েছেন। প্রধান সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফৌসির সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব ছিলো প্রকাশ্যে। তিনি নির্বাচিত হলে তাকে বরখাস্ত করারও ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন। হোয়াইট হাউস থেকে শুরু করে রাজপথে বেপরোয়া চলাফেরা করেছেন ট্রাম্প ও তার প্রশাসন। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে প্রচারণা চালিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে বৈরি অবস্থান তৈরি করেছেন। অর্থনৈতিক কারণ দেখিয়ে লকডাউনের বিপক্ষেও নিয়মিত কথা বলে গেছেন। যার পরিণতি যেমন আমেরিকার জন্য ভয়াবহ হয়েছে, তেমনি ট্রাম্পকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া থেকে বিরত রাখার রসদ যুগিয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনাহীন, যাচ্ছেতাই অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। করোনার শীর্ষস্থান যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। আক্রান্ত প্রায় কোটির কাছাকাছি। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ। অপরদিকে জো বাইডেন ক্যাম্প কোভিড ইস্যুতে যে অবস্থান নিয়েছিলেন সেটি তাকে এগিয়ে দিয়েছে এমনটাই দেখা গিয়েছিল গত মাসে করা এক জনমত জরিপে।
বিবিসি বলছে, মহামারী সম্পর্কে ট্রাম্পের যে অবস্থান ও যেভাবে তিনি বিষয়টি সামলেছেন সেটি শেষপর্যন্ত তার বিপক্ষেই গেছে। অপরদিকে জো বাইডেন ক্যাম্প কোভিড ইস্যুতে যে অবস্থান নিয়েছিলেন সেটি তাকে এগিয়ে দিয়েছে। গত মাসে এক জরিপে সেটার সত্যতাও দেখা গেছে। যাতে জো বাইডেন ১৭ পয়েন্ট এগিয়ে ছিলেন।
অর্থনৈতিক মন্দা
করোনাভাইরাস শুধু মানুষের জীবনেরই ক্ষতি করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দেশটি সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছে। বেকারত্ব, একের পর এক কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে যাওয়া, বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদন কমে যাওয়া অথবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রভৃতি কারণে অর্থনীতিতে নেমে এসেছে ভয়াবহ ও নজিরবিহীন বিপর্যয়। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে গেছে এবং পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হয়েছে। করোনার ফলে কর্মহীনের সংখ্যা তিন কোটি ৬৫ লাখে পৌঁছেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারিতে যে ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা কৌশলকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
বিবিসি বলছে, মহামারি ও এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায়শই যেভাবে লক্ষ্যচ্যুত হয়েছেন, বিজ্ঞানকে প্রশ্ন করেছেন, একদম হুট করে এলোমেলোভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পক্ষপাতমূলক আচরণ এই বিষয়গুলো জো বাইডেন ক্যাম্প সফলভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপক্ষে কাজে লাগিয়েছে।
জলবায়ু আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান
পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। উষ্ণতা বাড়ছে। বিশ্বকে বাঁচাতে হলে জলবায়ু পরিবর্তনরোধের বিকল্প নেই। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনরোধে আন্দোলন। মার্কিন তরুণরাও এটাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখেছেন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই এই বিষয়টাকে গুরুত্বহীন করে তুলেছেন। তিনি ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেদের সমর্থন তুলে নিয়েছে ট্রাম্প। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জাতিসংঘের নেতৃত্বে ওই জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্যারিস চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে ট্রাম্পের যুক্তি ছিলো যে, এটি মার্কিন স্বার্থবিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষাকারী একটি পরিবেশ চুক্তি করতে তিনি আগ্রহী। তবে সেটা যদি সম্ভব না হয়, তা নিয়ে প্রশাসনের কোনো উদ্বেগ নেই।
জলবায়ু গবেষকরা আশঙ্কা করে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলে পৃথিবীর উষ্ণায়নরোধ অসম্ভব হয়ে পড়বে।
মূলত জো বাইডেন তার নির্বাচনী প্রচারণায় প্যারিস চুক্তির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে তার প্রথম কাজ হবে, প্যারিস চুক্তিতে ফিরে যাওয়া। বিশ্লেষকরা মনে করেন, তরুণরা বাইডেনের এই প্রতিশ্রুতি পছন্দ করেছেন।
বর্ণবাদী অবস্থান
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার শুরু থেকে শেষ পযন্ত বর্ণবাদী প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে গিয়েছেন ট্রাম্প। শুরুতেই তিনি এক নির্বাহী আদেশে সিরিয়া, ইরান, ইরাক, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদান; এই ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দ্বারা তীব্র সমালোচিত হয়। আমেরিকার নাগরিকদের জন্য এর চেয়ে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গদের আন্দোলন। এর কারণও ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত তার মেয়াদের শেষ সময়ে এসে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্যদিয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠে আমেরিকাজুড়ে।
ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদন বলছে, একদিকে করোনাভাইরাস, অপরদিকে কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলন ট্রাম্পের অবস্থন নড়বড়ে করে দেয়। নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায়, প্রায় সব রাজ্যে অধিকাংশ কৃষ্ণাঙ্গ ভোট পেয়েছেন জো বাইডেন।
বাইডেনের মধ্যপন্থার বিপরীতে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থান
বিবিসি বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচনটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরকে বিভক্তি ও বিশৃঙ্খলার সময়কাল বলে উল্লেখ করা হয়। ট্রাম্পের সময় যে মেরুকরণ হয়েছে, যে ধরনের বিতর্কের জন্ম তিনি দিয়েছেন, মার্কিন জনগণ তা থেকে মুক্তি চেয়েছে। তারা শান্ত ও অবিচল একজন নেতা চেয়েছেন। ভোটারদের অনেকেই বলেছেন তারা ব্যক্তি হিসেবে ট্রাম্পের আচরণে রীতিমতো বীতশ্রদ্ধ। বাইডেন ক্যাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে যে, এই নির্বাচন যেন দুই প্রার্থীর মধ্যে যোগ্য একজনকে বেছে নেবার নির্বাচন নয়।
মূলত ট্রাম্প সব সময় সবকিছুতে প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ দেখিয়েছেন। বেপরোয়া আচরণের মাধ্যমে নিজ দেশে যেমন মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলেছেন, তেমনি দূরে সরে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থনও। জো বাইডেন এই বিষয়টিকে নিজের পক্ষে কাজে লাগিয়েছেন। শান্ত ও মার্জিতভাবে নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, যেন আমেরিকার নাগরিকরা এমন একজনকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান।
অভিবাসনবিরোধী নীতি
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রায় শুরু থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসনের বিরুদ্ধে তীব্র নেতিবাচক আচরণ করেছেন। শুরুতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করে অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এই দেয়াল নির্মাণের খরচের শতভাগ মেক্সিকো বহন করবে বলেও জানান ট্রাম্প, যা যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশের জন্য বাধা। তার বিপরীতে জো বাইডেন মেক্সিকো দেয়াল নির্মাণ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার নির্বাচনী প্রচারণায়।
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। দেশটিতে ঘরে বসেই শিক্ষার্থীরা ভার্চুয়াল ক্লাস করতে পারছে, পরীক্ষা দিতে পারছে; সবকিছু বেশ ভালোভাবেই চলছিল। হঠাৎ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক ঘোষণা দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসে কোন বিদেশী শিক্ষার্থী দেশটির কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে পারবে না। ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে নিতে হলে তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। যদিও তাদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। রয়েছে স্টুডেন্ট ভিসাও। যদি কোন শিক্ষার্থী নিজ দেশে ফিরতে না চায় তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়া হবে, ফিরতে বাধ্য করা হবে বলেও হুমকি দেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের আকস্মিক এ হুমকিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা ১০ লাখের বেশি বিদেশী শিক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগে পড়ে যায় তারা। বিরোধী ডেমোক্র্যাট থেকে শুরু করে রিপাবলিকান দলের উদারপন্থী- সবাই একবাক্যে এ নীতির সমালোচনা করেছেন। শেষ অবধি এই বিষয়টি আদালত পযন্ত গড়ায়। আদালতের চাপে কার্যত নতি স্বীকার করলেও নতুন করে একটি বোমা ফাটান ট্রাম্প। নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান অভিবাসন আইনে সংস্কার আনার ঘোষণা দেন। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন পাওয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি অগ্রাধিকার পায় সেটা হলো, পরিবারের সদস্য কিংবা আত্মীয়স্বজনের দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে বসবাস করা। অর্থাত পরিবারের সদস্য কিংবা আত্মীয়ের কেউ দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করলে, এরই মধ্যে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি কিংবা নাগরিকত্ব পেলে তবে অভিবাসনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। ট্রাম্প এ নীতি আমূল বদলে দিতে চান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের ক্ষেত্রে মেধা, দক্ষতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকেই তিনি ওবামা আমলের এ নীতি বদলে ফেলার কথা বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন।
জো বাইডেন ট্রাম্পের এই নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হলে যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দান করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বেশিরভাগ ভোটই পড়েছে ট্রাম্পের বিপক্ষে তথা জো বাইডেনের পক্ষে।
ট্রাম্পের হারের আরেকটা বড় কারণ হিসেবে গণমাধ্যমের প্রতি রোষাণলকে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম পূর্ণ কর্মদিবসে, তথ্য ও যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি বিষোদগার করেন ট্রাম্প। তিনি মার্কিন তথ্যমাধ্যমকে ‘বিশ্বে সবচেয়ে অসৎ’ বলে অভিহিত করেন। সিএনএনের বিরুদ্ধে তার অবস্থান সুস্পষ্ট ছিলো।
এছাড়াও গণমাধ্যমের প্রতি তার চরম ক্ষোভ ছিলো। তিনি নিজের বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ হলেই ‘ফেইক নিউজ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এই ধরনের আচরণকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।