Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

মোবাইল থেকে দেখে-শুনে গান শিখেছি: শফিকুল

ময়মনসিংহের প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে উঠা ছেলে শফিকুল ইসলাম। অভাবের সংসারে জন্ম নিলেও গানের প্রতি তার প্রেম ছিলো। সততা ছিলো। আর এই সততাই তাকে সারা দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তুলে। গান হয়ে উঠে উপার্জনের চাবিকাঠি। যা দিয়ে সংসারের অভাব ঘুচান ১৩ বছরের শফিকুল। শুধু তাই নয়, গান গেয়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে দুই বোনের বিয়েও দিয়েছেন তিনি।

আর এমন গল্পই সম্প্রতি তিনি করলেন চ্যানেল আইয়ের জনপ্রিয় আয়োজন ‘৩০০ সেকেন্ড’-এ। শাহিরয়ার নাজিম জয়ের উপস্থাপনা ও বিপ্লব সেহাঙ্গলের পরিচালনায় নিয়মিত এই অনুষ্ঠানের ১২০ তম অ্যাপিসোডে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের ঝাঁপি খুলেন শফিকুল।

ছোটবেলায় গ্রামে বিভিন্ন গানের আসর দেখেই নিজেকে শিল্পী হিসেবে ভাবতে শুরু করেছিলেন শফিকুল। মোবাইল থেকে দেখে দেখে গান শেখা শুরু। এরপর রিক্সাচালক ও শিল্পী বাবার হাত ধরে ছোট খাটো অনুষ্ঠানে গান গাইতে শুরু করেন। যে অল্প অর্থ রোজগার করতেন, তা দিয়েই চলতো সংসার।

সংগীত গুরুমুখি বিদ্যা, এমন ধারনা থেকে শফিকুল পরবর্তীতে তালিম নেন মিলন সরকার ও সুনীল কর্মকারের কাছ থেকে। ধীরে ধীরে আশপাশের গ্রামের লোকজনের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকেন তিনি। নাম লেখান সংগীতের বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ের অনুষ্ঠানে। যথারীতি সেগুলোতেও চমকে দেন ছোট্ট শফিকুল। ম্যাজিক বাউলিয়ানা, চ্যানেল আইয়ের গানের রাজা’র মতো অনুষ্ঠানে মাতিয়ে দেন তিনি। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে শফিকুলের নাম। বাংলা ফোকের জন্য তুমুল প্রশংসিত হয় তার গাওয়া গানগুলো।

ছোট হলেও চার ভাই ও তিন বোনের বিশাল সংসারে গান গেয়েই আর্থিকভাবে অবদান রাখতে শুরু করেন শফিকুল। প্রচুর অনুষ্ঠানে গাইতেন শফিকুল। সারা দেশে জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে যাওয়ার আগে একটি অনুষ্ঠানে রাতভর গেয়ে ১৫০০ টাকার মতো পেতেন। সেই অর্থের পুরোটা সংসারের জন্যই ব্যয় করতেন। এভাবে গান গেয়ে টাকা জমিয়ে দুই বোনের বিয়ে দেন তিনি।

শফিকুল জানান, গান গেয়েই তার পরিবারের অভাব দূর হয়েছে। আগে গান করলে ১৫০০ টাকা পেলেও এখন তাকে প্রতি অনুষ্ঠান থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়। বললেন, ‘গানের রাজা’য় ফার্স্ট রানার আপ হওয়ার পর তার জীবনটাই বদলে গেছে।

সবার জীবনে স্বপ্ন থাকে গাড়ি বাড়ি করা, কিন্তু শফিকুল এসব চান না। তিনি মানুষের মতো মানুষ হতে চান। সবার ভালোবাসার পরশে বেঁচে থাকতে চান। যেভাবে এখন আছেন।

Exit mobile version