Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

মুসলিম ধনী দেশগুলো কেনো আশ্রয় হবে না!

Advertisements

ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিস রোববার প্রার্থনার পর ঘোষণা করেছেন, ইউরোপের সকল ক্যাথলিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে গির্জাতে হলেও যেনো মুসলমান শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া হয়। তিনি ইউরোপবাসীকে শরণার্থীদের ভালো চোখে দেখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইউরোপের সকল ধর্মের মানুষ, সকল ধর্মের উপাসনালয়ের উচিত হবে এই মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়া।

এই ধর্মীয় গুরু এমন একটা সময়ে এই ঘোষণা দিয়েছেন যখন সিরিয়ার পাশের দেশ সৌদি আরবের সরকার ঘোষণা করেছে তারা কোনো শরণার্থী নেবে না। অথচ আরব লীগের সদস্য ও মুসলিম বিশ্বের নেতা হিসাবে তাদেরই সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত ছিলো।

সৌদি আরব রাষ্ট্র হিসেবে যেমন ধনী, তেমনি দেশটি আয়তনেও অনেক বড় এবং জনসংখ্যা অনুপাতে ঘনত্ব অনেক কম। অথচ জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি ইউরোপের ছোট ছোট দেশগুলো ঠিকই এই মানুষগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে।

ইউইউভুক্ত দেশ স্লোভাকিয়া যখন যখন ঘোষণা করেছিলো তারা মুসলিম শরণার্থী নিতে চাইছে না, তখন পুরো ইউরোপ জুড়ে এর সমালোচনা হয়েছে। শরণার্থীদের ধর্ম পরিচয় না দেখে মানুষ হিসেবে দেখার আহ্বান জানানো হয়েছিলো অন্য দেশগুলো থেকে এবং শেষ পর্যন্ত স্লোভাকিয়া তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়।

ইউরোপের দেশ জার্মানি এই মুহূর্তে শুধু শরণার্থীদের আশ্রয়ই দিচ্ছে না, সেখানকার সাধারণ মানুষজন রাস্তায় নেমে তাদের স্বাগতও জানাচ্ছেন।

রোববার সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে “রেফিউজি ওয়েলকাম” নামে একটি ৠালির আয়োজন করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই শোভাযাত্রায় ৩০ হাজার মানুষ যোগ দেবেন। দেশটির সাধারণ মানুষ এর মাঝেই শরণার্থীদের জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার চাঁদা নিজেরাই তুলে সরকারকে দিয়েছে।

আইসল্যান্ড ঘোষণা করেছে তারা ১০ হাজার রেফিউজি তো নেবেই, দরকার হলে এর চেয়ে বেশি। অথচ দেশটির মোট জনসংখ্যাই মাত্র তিন লাখ ত্রিশ হাজার!

ইউরোপের দেশগুলো যখন শরণার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছে তখন মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোর নীরব ভুমিকা রীতিমতো অবাক করে দিচ্ছে পুরো পৃথিবীর মানুষদের।

মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলো না হয় বিষয়টিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। কয়দিন পরতো মুসলিমদের সবচেয়ে বড় জমায়েত পবিত্র হজ্জ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেখানে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান জমায়েত হবেন। ধর্মীয় নেতারা সেখানে বয়ান রাখবেন। পুরো পৃথিবীর মঙ্গল কামনা করবেন।

এই যে ক্যাথলিক ধর্মীয় গুরু যেমন রোববার বলেছেন– শরণার্থীদের দরকার হয় গির্জা’তে হলেও জায়গা দেয়া দরকার; হজ্জের সময় ধর্মীয় নেতারা বয়ান দেয়ার সময় আমরা কি আশা করতে পারি না যে মানবতার দিকে তাকিয়ে মুসলমান ধর্মীয় নেতারা আহ্বান জানাবেন– মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মসজিদে হলেও যেনো এই শরণার্থীরা জায়গা পান।

Exit mobile version