নতুন বছরের শুরুতে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বাঁশি বাজতে চলেছে। তাই বছরের শেষ দিকে এসে শুরু হয়েছে পাওয়া না পাওয়ার জটিল হিসাব নিকাশ।চলছে সিটি নির্বাচনকে ঘিরে সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা।উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে কতোটা সফল হয়েছেন সিটি মেয়ররা- এমন প্রশ্নই ঘুরেফিরে আসছে। তাই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ডামাডোল শুরুর এই সময়ে জাহিদ নেওয়াজ খানের পরিকল্পনা, রাজু আলীমের প্রযোজনা ও সোমা ইসলামের উপস্থাপনায় চ্যানেল আই এর টু দ্য পয়েন্ট অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন কথা বলেন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনসহ নানা প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: নতুন বছরের শুরুতেই আবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আপনি আবার মেয়র পদের প্রার্থী হবেন। চট্টগ্রামের মানুষ কেন আবার আপনাকে নির্বাচিত করবে?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি ২০১৫ সালের ২৬ শে জুলাই। ৪ বছর ৪ মাস সময় আমি দায়িত্ব গ্রহণের অতিবাহিত হয়েছে। আমি যেই জায়গা থেকে শুরু করেছি সেই জায়গার সাথে যদি কম্পেয়ার করা হয় তাহলে দেখা যাবে এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। পরিকল্পিত এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল না- তা আমরা এখন পরিকল্পিতভাবে করছি। কারণ চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা অন্যতম সমস্যা। আমি দায়িত্ব গ্রহণের সময়ে এই সমস্যা ছিল।তার আগেও ছিল- এখনো আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি চট্টগ্রামের এই বিষয়টাকে অতি গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প সহায়তা করেছেন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দুটো মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। আর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্যে প্রকল্প দিয়েছেন। এছাড়া নতুন একটি খাল খনের জন্যে প্রকল্প দিয়েছেন।
প্রশ্ন: আপনি চট্টগ্রামবাসীকে আলো দিয়েছেন, রাস্তা দিয়েছেন এবং ড্রেনেজ সিস্টেম দিয়েছেন- কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেই এই নগরী পানির নীচে তলিয়ে যায়। এই ডুবে যাওয়া শহরকে উঠাবেন কি করে?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: আপনি যেভাবে জেনারালাইজড করছেন ওইভাবে না। সব ডুবে যায় না। সব ডুবে গেলে মানুষ তো আর বাঁচতে পারতো না? ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে আমাদের শহরে কিছু নিম্নাঞ্চল আছে। এই নিন্মাঞ্চল শুধু বর্ষা মৌসুমে নয়।অমাবশ্যা পূর্ণিমার সময়ে কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।জোয়ারের সময়ে শহরে পানি প্রবেশ করে আবার ভাটার সময়ে নেমে যায়।
আ জ ম নাছির উদ্দীন: এটা সরাসরি একটা মিথ্যাচার। কারণ আমি ছোটবেলা থেকেই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে এবং জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে ছাত্র অবস্থায় যখন আমি ৭ম শ্রেণীতে পড়ালেখা করি তখন থেকেই আমি ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হই। আমার রাজনৈতিক বয়স-১৯৬৯ সালে যখন আন্দোলন শুরু হয়েছিল। আমি সেই আন্দোলনের মিছিলে শরীক হয়েছিলাম। সেই হিসাবে আমার রাজনৈতিক বয়স এখন ৫০ বছর।আমি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম ১৯৭৭ সালে। আর জামায়াত শিবির বিরোধী চট্টগ্রাম শহরে এবং চট্টগ্রাম শহরের আশেপাশেও যতোগুলো জামায়াত শিবির বিরোধী আন্দোলন হয়েছে এবং সেই সব আন্দোলনে আমার এবং আমার শুভাকাঙ্খিদের সাথে তাদের যতো সংঘাত বা সংঘর্ষ হয়েছে তা আর অন্য কারো সাথেই হয়নি। চট্ট্রগামে জামায়াত শিবিরকে কোনঠাসা ও উৎখাত করেছি আমি- আ জ ম নাছির উদ্দীন।
প্রশ্ন: তাহলে এই অভিযোগগুলো কারা রটায়?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: এখন অভিযোগের তো শেষ নাই। কিন্তু অভিযোগের তো ভিত্তি থাকতে হবে? এখন আমাদের সমাজে অপপ্রচার এবং অপতৎপরতা আছে। এই তৎপরতা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আছে না? আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিতে চায়। এই ভিত্তিহীন কাল্পনিক মিথ্যাচার তো করা হয়। আওয়ামী লীগ ইসলামের ক্ষতি করে এই মিথ্যাচারও তো রটানো হয়। এইগুলো তো মিথ্যাচার। ইসলামের জন্যে যা কিছু করেছেন জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান করেছে- একটা ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে। এখন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। জননেত্রী ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে বঙ্গোপাসাগরে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, সমুদ্র সীমা অর্জন করেছেন সেই মামলার বিজয়ী হয়ে। এরপরেও এই দেশের কিছু সংখ্যক মানুষ এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই মিথ্যাচার এবং প্রপাগান্ডা করেন কারণ তাদের কোন রাজনৈতিক বক্তব্য নাই। মানুষকে প্রলুব্ধ করা এবং মন জয় করার মত তাদের যোগ্যতা নাই। তাই তারা এই সব রটায়।
প্রশ্ন: নিশচয়ই জামায়াত শিবির রটায় না? আপনার নিজ দলের ভেতর থেকে এসব রটায়?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: হতে পারে। কারণ আমার দলের সবাই তো আর আমার শুভাকাঙ্খিদের নয়। যারা আমার জায়গায় আসতে চায়। তারা আমার যদি অন্য কিছু খুঁজে পায় না। তাই এসব কথা বলে।আমি দলকে আরও শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ করেছি।
প্রশ্ন: বলা হয়ে থাকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের ত্যাগী নেতাদের আপনি মূল্যায়ন করছেন না? তার বদলে রাজাকার সাকা চৌধুরী এবং গিয়াস কাদের চৌধুরী তাদের পরিবারের সাথে আপনার সখ্যতা? এছাড়া বিএনপি’র ড. শাহাদতের সাথে আপনার সম্পর্ক?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: এটা আপনার মুখ থেকে জীবনে প্রথমবারই আমি শুনলাম। এসবের কোন ভিত্তিও নাই। শতভাগ মিথ্যা কথা। আমি চট্টগ্রাম থাকার সময়ে সারাদিনই মানুষের সাথে মেলামেশা করি- কোন মানুষ তো এসব বলে না। জীবনে প্রথম শুনলাম এই ধরণের কথা। এসবের প্রশ্নই আসে না। আর আমার দলের মূল্যায়নের কথা বললেন? মূল্যায়নের ব্যাপারে তো আমার কোন হাত নাই? মহানগরের কোন কমিটি তো আমি করিনি? কমিটি করার এখতিয়ার আমার নাই। আমার ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা- যেগুলো আছে সেখানে তো আমরা সম্মেলনই করি নাই। তা হলে মূল্যায়নের ব্যাপারটা তো কাল্পনিক। অভিযোগ উত্থাপনের আগে যাচাই বাছাই করতে হবে যে, এটা কি আসলে ঠিক কি মিথ্যা?
প্রশ্ন: কোন অভিযোগ উঠলেই সবাই বলে এটা গুজব অথবা মিডিয়ার ভিত্তিহীন সংবাদ?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: মুখের উপরে ট্যাক্স বসানো উচিত।যদি মুখের উপরে ট্যাক্স বসিয়ে দেওয়া যেতো তাহলে দেখা যেতো ট্যাক্স আদায়ে এই খাত থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হতো।আমাদের দেশে বসে বসে যে পরচর্চা করা হয় পরনিন্দা ও সমালোচনা করা হয় – কোন সভ্য এবং উন্নত দেশে তো এগুলো করা হয় না। এইগুলো তো ভিত্তিহীন। যাচাই বাছার করা গেলে দেখা যাবে এসবের বেশির ভাগেরই সত্যতা নেই।
প্রশ্ন: গুজব এবং ষড়যন্ত্র?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: সত্যতা নাই- ভিত্তিহীন।যেগুলো সত্য আছে সেগুলো অবশ্যই উপস্থাপন করা উচিত এবং তা নিয়ে আলোচনা করা দরকার। মুখের উপরে ট্যাক্স বসানো উচিত।
প্রশ্ন: আপনি বলছেন যে, মুখের উপরে ট্যাক্স বসানো উচিত কিন্তু আপনি যখনই যে কথা বলেন- খুবই সমালোচিত হয়ে যায়। দেশজুড়ে সেটা আলোচনা হয়ে যায়। আমরা জানি না- আপনার মুখের উপরে ট্যাক্স বসাতে হবে কিনা? কারণ কয়েকদিন আগে আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বলেছিলেন- এটি একটি ষড়যন্ত্র।এই হত্যাকাণ্ডের জন্যে প্রধানমন্ত্রী নোবেল পুরস্কার থেকে দূরে সরে গেলেন? তিনি নোবেল পুরস্কারটা পেলেন না?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: না- না- না। এই ধরণের কোন বক্তব্য আমি দেইনি। বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো ক্রস চেক করেন।আবরার হত্যা কেন ষড়যন্ত্র হতে যাবে? এটা তো দিবালোকের মত সত্য?
প্রশ্ন: তাহলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজকে নোবেল দেওয়া উচিত এই কথা কি আপনি বলেছিলেন?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: না-না—অ্যা-অ্যা। আপনাকে আমি বলি। এইটা হলো যে, কথাগুলোকে টুয়িস্ট করার কোন সুযোগ নাই। আপনাকে বুঝতে হবে যে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এখানে হলো এটার তেরোশ জনের বরাদ্দ।
রোগীকে সেবা দেওয়ার জন্য ডাক্তার সেখানে নিয়োজিত আছেন এবং নার্স নিয়োজিত আছেন এবং অন্যান্য কর্মকতা কর্মচারী যা লাগে একটা হসপিটাল পরিচালনার জন্যে যা লাগে তেরোশ জন। সেইখানে কিন্তু আউট ডোর এবং ইনডোর মিলে ভর্তি করানো হয় প্রতিদিনই তিন হাজার প্লাস কম বেশি হয়। আর আউটডোরও হয় সেই ভাবে। যার কারণে একটা হসপিটালের আপনি ভেতরে এবং বাইরে এখানে আপনার সিটের নীচে সীটের পাশে করিডোরে ফ্লোরিং করে রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।এই যে আমার কথাটা হলো- যে পরিবেশে আমাদের ডাক্তাররা সেবা দেন এইটাকে জেনারালাইজড করতে হবে। কোন ডাক্তার যদি অনিয়ম করে যদি অন্যায় করে তার দায়িত্বে অবহেলা করে তাহলে তাকে একবারে সুনির্দিষ্ট করা হোক যে, অমুক ডাক্তার সে এই অনিয়মটা করেছে।এই সেবা থেকে রোগীকে বঞ্চিত করেছেন। তাকে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এটা।কিন্তু পুরো ডাক্তার সমাজকে তো এটার জন্যে দায়ী করা যায় না।যে পরিবেশে দায়িত্বটা পালন করছেন তারা। আমি কথার ছলে বলেছি এইখানে- আমাদের কথার ছলে তো অনেক কথা হয়। তখন বললাম- যে পরিবেশে আমাদের ডাক্তাররা বা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডাক্তাররা যে পরিবেশে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
এই কথাটা বলেছি- কারণ তোরশোর জায়গায় তারা প্রতিদিন প্রায় ৬-৭ হাজার মানুষকে সেবা দেন। আর আমরা যাদের সাথে কম্পেয়ার করি। আমাদের দেশে আছে- ইউনাইটেড, স্কয়ার এবং অ্যাপোলো এইগুলো। এর সাথে সরকারি মেডিকেলের পরিবেশ তো এক না? সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর উপরে প্রচুর চাপ আছে। এর সাথে আরও কারা? রোগীর সাথে রোগীর আত্মীয় স্বজনরা দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা যে সেবার সাথে তুলনা করি বা প্রত্যাশা করি। সেখানে কি রোগীর আত্মীয় স্বজনকে কি অ্যালাউ করা হয়? তাই আমি বলেছি- যে পরিবেশে আমাদের ডাক্তাররা সেবা দেন তাতে যদি নোবেল পুরস্কারের ব্যাপার থাকতো তাহলে আমাদের ডাক্তাররা সেই পুরস্কার পেতেন।
প্রশ্ন: সারাদেশব্যাপী দুর্নীতি বিরোধী শুদ্ধি অভিযান চলছে। ক্যাসিনো কি শুধু ঢাকাতে? পর্যটন আর বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম সেখানে ক্যাসিনো কতোটা আছে?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: এই বিষয়গুলো নিয়ে আমিতো বড় করে কথা বলেছি। সেই কথাগুলো তো আপনারা আনলেন না? বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছেন এবং এই কথা আমি স্পষ্ট করে বারেবারে বলেছি। আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন বলেছি- আমার প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে আমি সুযোগ পেলে দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবো। আর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে এই দায়িত্ব পালন করবো। সেই হিসাবে আমি দায়িত্ব পালন করছি। যখনই ক্যাসিনো নিয়ে কথা বলা হয়েছে তখনই আমি এই বক্তব্য নিয়ে জোরালোভাবে আমার বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। খেলাধুলা নিয়ে প্রথম সুচনা যেহেতু এখান থেকেই। আমি নিজে একজন ক্রীড়া সংগঠক। ১৯৮৫ সাল থেকে চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।এখন সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। কথা এসেছিল ক্লাব চালাতে গেলে অর্থের জন্যে এই ধরণের ক্যাসিনো আসতে পারে। সেই সময় আমি বলি- এই কথার সাথে সম্পুর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করি। ক্লাব একটি পবিত্র জিনিস। এটা চালানোর জন্যে অনৈতিক উপায়ে টাকা কামানোর কোন দরকার নাই।আমরাও তো ক্লাব চালাই তার জন্যে তো খারাপ কাজ করতে হচ্ছে না?
প্রশ্ন: কিন্তু তার মধ্যে যে অনৈতিক কাজ হচ্ছে না তার জন্যে কতোখানি নজরদারি আছে আপনার?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: ঢাকায় এই অভিযানের পরে চট্টগ্রামেও কিন্তু এই অভিযান চালানো হয়েছিল। চট্টগ্রামে কোথাও ক্যাসিনোর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
প্রশ্ন: সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়রের সহধর্মিনীকে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং তা বিতর্কের এবং সমালোচনার জন্ম দেয়। এই কাজটা আপনি কেন করতে গেলেন?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: আমি বিনয়ের সাথে বলবো। আমি সভা পরিচালনা করছিলাম। নামিয়ে দেওয়া হয়েছে– এটা ঠিক না।এটাকে টুয়িস্ট করা হচ্ছে। আমি যখন অনুষ্ঠান পরিচালনা করবো- অনুষ্ঠানে মঞ্চের শৃংখলা রক্ষা করা একটা দায়িত্ব। এর বাইরে হলো আগেরদিন রাতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ এবং মহানগর আওয়ামী লীগের আর তিনটা জেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা আমরা উপস্থিত ছিলাম। সেখানে দায়িত্বকপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মাননীয় মন্ত্রী এনামুল হক শামীম এর উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে কারা কারা মঞ্চে বসবে এবং কতোজন? সেই অনুযায়ী আমি মাইকে এটি বারেবারে ঘোষণা করেছি এবং আমি বলেছি বারেবারে যে, আপনারা যারা এর বাইরে মঞ্চে আছেন তারা দয়া করে নীচে নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসুন।
প্রশ্ন: সেখানে কাউকে অসম্মান করার জন্যে করেননি?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: না। কাউকে কোন ধরণের চুল পরিমাণ কারো সাথে অসম্মান করা হয় নাই। কোন ধরণের বিরূপ আচরণও করা হয়নি। এটা আমি বলবো যে, অহেতুক বিতর্ক তৈরী করার জন্যে এক্স ওয়াই জেড এটা করেছে।
প্রশ্ন: আবার নির্বাচন আসছে। আপনি আবার জয়ী হবার ব্যাপারে কতোটা আশাবাদী?
আ জ ম নাছির উদ্দীন: মানুষ অবশ্যই বিবেচনায় নেবে যে, আমি কোন অবস্থায় চট্ট্রগাম সিটি পরিচালনার দায়িত্ব শুরু করেছি। আর এখন কোন জায়গায় চট্টগ্রামকে নিয়ে যেতে পেরেছি। চট্টগ্রামের কাংখিত এবং প্রত্যাশিত যে উন্নয়ন সেটা করার জন্যে আমি কতোটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি এবং কতোটা ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আমাদের দায়িত্বগুলো নির্ধারিত আছে। আমি কতোগুলো কাঁচা রাস্তাকে পাকা রাস্তায় পরিণত করেছি। রাস্তাগুলোকে সংস্কার করা হয়েছে। প্রচুর ড্রেনেজ করেছি। মিড আইল্যান্ড করেছি। নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন ও সুবজায়ন করেছি। আগে ফিফটি পারসেন্ট সড়ক অন্ধকার ছিল।
এখন এলইডি লাইট প্রভাইড করেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা নিয়ে। ৮০ পারসেন্ট সড়ক সড়ক বাতি দ্বারা আলোকিত করতে পেরেছি। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ দিনের পরিবর্তে রাতে নিয়ে গেছি। বাড়ি ও প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে খুব কম সময়ে আমরা ডাম্পিং ইয়ার্ডে নিয়ে যেতে পেরেছি এর কারণে শহরটা আমি দায়িত্ব গ্রহণের আগে যে অবস্থায় ছিল রাস্তার প্রধান সড়কে ময়লার স্তুপ পড়ে থাকতো। অনেক জায়গায় মানুষ দুর্গন্ধে নাক বন্ধ করে চলাচল করতো এখন কিন্তু সেই অবস্থায় চট্টগ্রাম সিটি নেই। ভবিষ্যতে এই অবস্থা আরও ভাল হবে- এটাই বলত পারি।