নতুন বাজেটে বিভিন্ন বিষয়ে সিনেট মতৈক্যে আসতে ব্যর্থ হওয়ায় খরচ বাঁচাতে একেবারে অত্যাবশ্যকীয় বাদে বাকি সব সরকারি কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে মার্কিন ফেডারেল সরকার।
শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত পর্যন্ত নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রধান সব বিষয় নিয়ে তুমুল বাকবিতণ্ডা চলেছে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক সিনেটরদের মধ্যে। মধ্যরাত পর্যন্ত আলোচনা, বিতর্ক ও ভোটে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ‘গভর্নমেন্ট শাটডাউন’ বা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি অফিসসমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দীর্ঘ ৫ বছরে এই প্রথম সরকার বন্ধের ঘটনা ঘটল। এর আগে ২০১৩ সালে হওয়া শাটডাউনের অধীনে ব্যয়বণ্টনের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে টানা ১৬ দিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ সরকারি অফিস বন্ধ ছিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিক ইতিহাসে কংগ্রেস এবং হোয়াইট হাউজ একই দলের অধীনে থাকার পরও শাটডাউনের ঘটনা এই প্রথম।
সিদ্ধান্তে আসতে না পারলেও যেন সরকারকে আগামী মাস পর্যন্ত কাজ চালানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় সেজন্য বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তখন ২৩০ বনাম ১৯৭ ভোটে বরাদ্দের পক্ষে ভোটের ফল গেলেও শুক্রবার শেষ মুহূর্তের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর সিনেটে অনুষ্ঠিত ভোটে প্রস্তাবটি মার খায়। সিনেটে অর্থ বরাদ্দ সময় বাড়ানোর প্রস্তাবটি পাস হওয়ার জন্য ৬০ ভোটের প্রয়োজন হলেও ৪৯ ভোট পেয়ে থেমে যায় সেটি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার এক বছর পূর্তির দিনই এই সরকার বন্ধের ঘটনা ঘটল। যদিও এর জন্য তৎক্ষণাৎ ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেছে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজ।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস জানিয়েছেন, শাটডাউনের অধীনে তার বিভাগের অর্ধেকেরও বেশি কর্মী কাজে যাবে না। এছাড়া বেশকিছু রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষণ এবং গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড স্থগিত থাকবে।
হোয়াইট হাউজ প্রেস সচিব সারাহ স্যান্ডার্স মাঝরাতের ঠিক আগে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজ রাতে, তারা (ডেমোক্র্যাট) রাজনীতিকে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, সেনা সদস্যদের পরিবার, বিপদের ঝুঁকিতে থাকা শিশু এবং প্রত্যেক আমেরিকানকে আমাদের দেশের সেবাদানের ক্ষমতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা যেখানে অবৈধ অভিবাসীদের অবস্থান নিয়ে সমঝোতায় আসতে রাজি নই, সেখানে তারা বেপরোয়া সব দাবি তুলে আমাদের বৈধ নাগরিকদের জিম্মি করছেন। এটা প্রগতিবিরোধী ব্যর্থদের আচরণ, আইনপ্রণেতাদের নয়।
মার্কিন সিনেট যখন নতুন অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে আলোচনার শেষ সময় বা ডেডলাইন পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারে না তখন ওই নির্ধারিত সময়ের পর ‘গভর্নমেন্ট শাটডাউন’ (Government shutdown) ঘোষণা করা হয়। এর অধীনে সাধারণত একেবারে অত্যাবশ্যকীয় ছাড়া বাকি সব সরকারি অফিস বন্ধ থাকে খরচ বাঁচানোর জন্য। নতুন বাজেট সিনেটে পাস হওয়ার পরই কেবল শাটডাউন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে ফেডারেল সরকার।