Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক জাতি গঠনে রবীন্দ্র চর্চা বাড়াতে হবে

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আধুনিক ভারতের ৪ জন প্রতিষ্ঠাতার (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহেরু এবং বি. আর আম্বেদকর) তালিকায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম রেখে ভারতে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ তার এক প্রবন্ধে লিখেছেন, “রবীন্দ্রনাথ ভারতবাসীকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। যুগিয়েছেন স্বাধীনতার প্রেরণা। জাগিয়েছেন তার চেতনার রঙে, নানা বর্ণ সমাহারে। ভাসিয়েছেন তার সত্তার জ্যোতির্ম্ময় শিখার আলোকের ঝর্ণাধারায়। রবিরশ্মির শুভ্র দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে ভারতবর্ষসহ বিশ্বময়। তবে রবীন্দ্রনাথের জাতীয়তাবাদ ছিল সামগ্রিক অর্থে। অর্থাৎ সার্বজনীন। একই সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ ও যুক্তিনির্ভর।” ১৮৬১ সালে জন্ম নিয়ে ১৯৪১ সালে মৃত্যুবরণ করা এই কবির সাহিত্য, জীবন ও দর্শনের প্রভাব আধুনিক ভারতের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক বাংলাদেশেও অনেক। অসাম্প্রদায়িক ও সংস্কৃতিমনা বাংলাদেশী বাঙালি শিশুর সংস্কৃতি চর্চার প্রথম পাঠ বেশীরভাগ সময়ই শুরু হয় রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি দিয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী সোমবার (২৫ বৈশাখ)। দিবসটি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে বহুযুগ ধরে। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।ইউরোপীয় রেনেসাঁ থেকে মানুষের মুক্তি, সমতা, স্বাধীনতা- এমন অনেক ধারণা গ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এজন্য ইউরোপীয় সভ্যতার প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভক্তির সীমা ছিল না। সেই ইউরোপীয় রেনেসাঁর সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশের বহুজাতিক জাতীয়তাবাদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছিল রবীন্দ্রনাথের চিন্তাধারা। সেই ধারাতেই রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় যে রাজসিক বিচরণ, সেখানে দেশপ্রেম থেকে শুরু করে মানবপ্রেম, সামাজিক দর্শন থেকে শুরু করে জাতিগত-রাজনৈতিক দর্শনের চিত্র ফুটে উঠেছে। সেই যুগে তিনি পরিবার পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন, আধুনিক কৃষি, উচ্চ শিক্ষার পরে দেশে ফিরে উন্নয়ন, সমবায় ব্যাংক, বিনামূল্যে শিক্ষাসহ বিজ্ঞান চর্চায় গুরুত্ব বিষয়ে কাজ করে গেছেন। তার সাহিত্যকর্মে সেসব পরিষ্কার পরিস্ফুটিত হয়েছে। সেইসব বিষয় মাথায় রেখে দেশের শিল্প-সাহিত্যাঙ্গনে বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমসহ বেসরকারী গণমাধ্যমগুলোতেও বিশ্বকবির বিভিন্ন সাহিত্যকর্মের প্রদর্শন হবে। বিশ্বকবির সাহিত্যকর্ম ও দর্শন থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের শিক্ষাঙ্গন থেকে শিল্পাঙ্গনে রবীন্দ্র চর্চা বাড়াতে সরকারসহ সকলে এগিয়ে এলে মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক জাতি গঠনের সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি।

Exit mobile version