চাঁদপুর থেকে এইচএসসি পাশ করে রাজধানীতে পাঠাওয়ের চালক হিসেবে কর্মরত থাকার পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে লোকমান হোসেন।
লোকমান ও তার সহযোগী জিহাদ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফেন্সিডিল সংগ্রহ করত। উবারের গাড়ি চালক সাদ্দাম হোসেনের গাড়িটিকে মাদক সরবারহের কাজে লাগাত লোকমান ও জিহাদ।
এই তিনজন দীর্ঘদিন ধরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক চোরাচালান করছিল।
রাজধানীর টঙ্গী থেকে অভিনব কায়দায় মাদক পরিবহনকালে আন্তঃজেলা মাদক ব্যবসায়ী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। শনিবার দিবাগত রাতে টঙ্গীর শালিকচূড়া এরশাদনগরের সামনে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন, শিবু বর্মন, রসেন বর্মন, মো.নূর ইসলাম, মো. লোকমান হোসেন, মো.জিহাদ হোসেন, মো. সাদ্দাম হোসেন।
এসময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ৮৫৮টি ফেন্সিডিল, ৯টি মোবাইল, নগদ পঞ্চাশ হাজার ৫০০ টাকা, ১টি ট্রাক, ১ টি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: বেশ কিছুদিন ধরে একটি মাদক ব্যবসায়ী চক্র দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মাদক দ্রব্য কৌশলে রাজধানীতে নিয়ে আসছিল।তারা নানা রকমের কৌশল অবলম্বন করে কখনো যাত্রীবাহী বাসে করে, কখনো পঁচনশীল মৌসুমী শাক-সবজি বহনকারী ট্রাকে করে, কখনো ধান, ভূট্টা বহনকারী গাড়িতে করে, আবার কখনো কখনো ব্যক্তিগত গাড়িতে করে মাদক দ্রব্য রাজধানীতে নিয়ে আসছিল।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারে দিনাজপুর হতে মাদকের একটি বড় চালান রাজধানী ঢাকায় আসছে, পরে নজরদারী বৃদ্ধি করে গাজীপুর থেকে চক্রের ৬ জনকে আটক করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্বে থাকা র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আটক শিবু বর্মন পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার। সে গত প্রায় ১০ বছর যাবত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক চালিয়ে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ফাঁকি দিয়ে ট্রাকে মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল দেশের বিভিন্ন জেলা হতে রাজধানীতে নিয়ে আসে। মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে চালানপ্রতি বিশ হাজার টাকা করে দিত। এর আগে সে একাধিকবার দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মাদকের চালান ঢাকায় নিয়ে আসে। মাদক পরিবহনে রসেন বর্মন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে।
রসেন বর্মন ২০১৮ সালে এসএসসিতে ফেল করার পর গ্রামে কৃষিকাজ করত। কৃষিকাজের ফাঁকে ফাঁকে সে শিবু বর্মন এর সাথে মাদক পরিবহনে সহযোগী হিসেবে কাজ করত। সে শিবু বর্মনের সঙ্গে একাধিকবার দেশের বিভিন্ন স্থান হতে মাদকের চালান ঢাকায় নিয়ে এসেছে।
আটক নূর ইসলাম ফেন্সিডিলের চালান গাজীপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করত। সে গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবে জুয়ার বোর্ড দেখাশুনা এবং মাদক ব্যবসা পরিচালনা করত।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।