শবে বরাতকে মুক্তির রাত বলা হয়। এদিন মুসলমানদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য পাওয়ার রাত। এ রাতে মুসলমানরা সারারাত সৃষ্টিকর্তার উপাসনায় মগ্ন থাকে।
এ রাতে নফল ইবাদতের আলাদা গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একে হাদিসের ভাষায় ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা অর্ধশাবানের রাত বলা হয়েছে। মুসলিমদের জন্য সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ রাতের একটি হলো শবে বরাত। এ রাতে মুমিন বান্দাহরা ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে পরিশুদ্ধ জীবনযাপনের জন্য আল্লাহর অনুগ্রহ কামনা করেন।
শবে বরাত মুসলমানদের কাছে পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তাও। এর মধ্য দিয়েই শুরু হয় রমজান মাসের সিয়াম সাধনার প্রস্তুতি। মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এটি ভাগ্য নির্ধারণের রাতও। এ রাতের আগে ও পরে অনেকে রোজা রাখেন। বলা হয়ে থাকে, শবে বরাতের সময় আল্লাহ পরবর্তী বছরের জন্য মানবজাতির রিজিক ও সবার ভাগ্য নির্ধারণ করেন এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানের গুনাহ মাফ করে দেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এ রাতে নফল ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন থাকতেন। তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এই রাতের গুরুত্ব অত্যধিক।
প্রতিবছরের মতো এবারও ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে এ রাতের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। তবে এ বছর এমন এক সময়ে শবে বরাত এলো, যখন সারা বিশ্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় যারা সমাজের বিত্তবান শ্রেণির মানুষ তাদের কর্তব্য হলো বিত্তহীন ও গরিবদের সহায়তা করা। মনে রাখতে হবে, সহায়তা পাওয়া গরিবদের হক।
গত দুই বছর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শবে বরাত পালিত হয়েছে করোনা সংক্রমণের মধ্যে। করোনার প্রকোপ অনেকটা কমে এলেও সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে ইবাদত-বন্দেগি করবেন, এমনটিই আশা করি। শবে বরাত উপলক্ষে অনেক সময় আতশবাজি পোড়ানো হয়, যা এ রাতের মহিমার সঙ্গে একেবারেই মেলে না। তাই এ বিষয়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও সমাজের সচেতন অংশকে সতর্ক থাকতে হবে।
সব ধরনের অনাচার থেকে দেশ ও বিশ্বমানবতা মুক্তি পাক এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর করুণা সবার ওপর বর্ষিত হোক, এটিই এ পবিত্র রাতের প্রার্থনা। এ রাতের কল্যাণে সংকটকাল কেটে যাক, আগামী দিনগুলো আরও মঙ্গলময় হয়ে উঠুক।