আগামী দুই বছরের জন্য নতুন ভ্যাট আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাবে এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসা ব্যবসায়ীরা এখন খুশি। এ যেন তাদের কাছে ঈদের পরও ঈদ আনন্দ। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলছেন, আইনটি স্থগিত করায় তারা আনন্দিত। তবে এই আইনে যেসব জটিলতা রয়েছে সেগুলোতে সংশোধনী এতে তা ব্যবসাবান্ধব করা হলে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা উভয়ই উপকৃত হবে।
বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে সাধারণ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী আগামী দুই বছরের জন্য ২০১২ সালের নতুন আইনটি স্থগিত রাখার প্রস্তাব করেন। একই সঙ্গে ১৯৯১ সালের পুরানো আইনটি বলবৎ রাখার জন্য অর্থমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন।
নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর না করতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। যুক্তি হিসেবে তারা বলছে, আইনটি খুব জটিল। এতে ভোক্তার যেমনি ব্যয় বাড়বে তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারী আকারের ব্যবসায়ীরা। তবে আইনটি আপাতত স্থগিত করায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে বলে জানান তারা।
নতুন ভ্যাট আইন সংশোধনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন—এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ও ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবু মোতালেব।
তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ভ্যাট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। আন্দোলন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ভোক্তার কথা বিবেচনা করে ও তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আন্দোলন করেছিল। নতুন আইনটি কার্যিকর করা হলে ভ্যাট আদায় নিয়ে এনবিআরের সাথে ব্যবসায়ীদের অনেক সমস্যা তৈরি হতো।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের জন্য নতুন আইনটি স্থগিত করেছেন। তিনি খুব ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। এতে ভোক্তা এবং ব্যবসায়ী উভয় উপকৃত হবেন।
তবে এই দুই বছরের মধ্যে নতুন আইনকে ব্যবসাবান্ধব করে তৈরি করা হলে ব্যবসায়ীরা স্বস্তি পাবে। এই বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাবো।
ভ্যাট আইন স্থগিত করায় ব্যবসায়ীরা খুশি হয়েছে বলে জানান এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ। তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায় না করতে সরকারকে আমরা বার বার অনুরোধ করেছি।ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এফবিসিসিআইর সভাপতি শফিউল ইসমলাম মহিউদ্দিন প্রধানমন্ত্রীকে জোর অনুরোধ করেছিলেন। তখন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আইনটি বাস্তবায়ন না করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
মুনতাকিম আশরাফ বলেন, আইনটি বাস্তবায়ন করা হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এখন অন্তত তারা দুই বছরের জন্য স্বস্তি পাবে।
‘আজ মহান সংসদে ২০১২ সালের ভ্যাট আইনটি আগামী দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই জন্য আমরা আনন্দিত।’