মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চার লাখ টাকায় পাঠানো হতো ভিয়েতনাম। সেখানে নিয়ে পাসপোর্ট আটকে চালানো হয় নির্যাতন। পাসপোর্ট আটকে রাখার কারণে চাইলে দেশে ফিরতে পারতেন না ভুক্তভোগী বাংলাদেশিরা।
গত ৩ জুলাই এক বিশেষ ফ্লাইটে ভিয়েতনাম থেকে ১১ বাংলাদেশি অভিবাসী দেশে ফিরেন। এছাড়া, আরো ২৭ জন অভিবাসী ভিয়েতনামে আটক অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনা তদন্তের ধারাবাহিকতায় পল্টনের ‘মাশ ক্যারিয়ার সার্ভিস’ এবং ‘দি জেকে ওভারসিস লিমিটেড’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- জামাল উদ্দিন ওরফে সোহাগ (৩৪), কামাল হোসেন (৩৯) ও জামাল হোসেন (৩৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৫৪ টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান।
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, আটকরা একাধিকবার ভিয়েতনামে গিয়ে সেখানকার দালালদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানকার দালালরা জানায়, বাংলাদেশ থেকে ব্যবসায়িক উদ্যোক্তাদের ভিয়েতনামে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এর ভিত্তিতে আটকরা দেশের স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে সাধারণ লোকজনকে মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করাতো।
এরপর তাদের পাসপোর্ট আটকে একটি ঘরে জিম্মি করে পরিবারের কাছে অর্থ দাবি করে। এদিকে, ভুক্তভোগীদের কোনো স্থায়ী কর্মসংস্থান না করে বিভিন্ন সময়ে ছোট ছোট কাজ দেয়া হয়। পাসপোর্ট আটকে থাকায় ভুক্তিভোগীরা চাইলেও দেশে ফিরতে পারেন না।
আটকরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এজেন্সীর লাইসেন্স ব্যবহার করে স্থানীয় পর্যায়ে দালাল নিয়োগের মাধ্যমে ভিয়েতনামে মানবপাচার করে আসছিলো। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান রকিবুল হাসান।