ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় মর্মাহত তার সহপাঠীরা, মর্মাহত তার পরিবার। অরিত্রির পুরনো স্মৃতি আর জিনিসপত্র হাতড়ে কাটছে তার মা-বাবার দিন। পৃথিবীর কোনো সান্ত্বনাই শান্ত করতে পারছে না সদ্য বুকের মানিক হারানো এই বাবা-মাকে।
পরিবারের বরাতে জানা যায়, মেধাবী ছাত্রী ছিলেন অরিত্রি অধিকারী। স্বভাবে ছিল চটপটে আর প্রাণবন্ত। এমনকি ভিকারুননিসার ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয় সে। এরপর আর পিছেনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। সবসময় ভাল ফলাফল ছিল তার সঙ্গী। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও সে ছিল সমানভাবে পারদর্শী। দুই বোনের মধ্যে অরিত্রি ছিল বড়, তার ছোট বোনও ভিকারুননিসার ছাত্রী।
ভিকারুননিসার ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ‘‘যারা ভিকারুননিসায় লেখাপড়া করেছেন বা করছেন তাদের অনেকে এভাবে লুকিয়ে মোবাইল রাখে, বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ রাখতে। কারণ, ছুটির পর অনেক সময় চাইলেও দারোয়ান ফোন দিতে দেয় না। তাই এটা নিয়ম বহির্ভূত হলেও মোবাইল সঙ্গে রেখেছিল অরিত্রি।
রোববার পরীক্ষা চলাকালে এক শিক্ষিকা দেখে ফেলেন অরিত্রির মোবাইল। আর তাতেই বাধে বিপত্তি। তিনি অভিযোগ করেন, মোবাইলের মাধ্যমে নকল করছিল অরিত্রি।
অরিত্রি সেসময় ওই শিক্ষককে বলেছিল তার ফোনে নকল নেই, কিন্তু শিক্ষক তা মানতে রাজি হননি। পরে অরিত্রির মা-বাবাকে ডেকে অপমান করা হয় এবং পরবর্তীতে টিসি নিয়ে যেতে বলা হয়। বার্ষিক পরীক্ষার এই সময় তাকে টিসি না দিতে ম্যাডামের পা ধরতে যায় সে। কিন্তু ম্যাডাম তাকে অপমান করে সরিয়ে দেয়।
এরপর লজ্জায় অপমানে সেসময় শিক্ষকের রুম থেকে বের হয়ে বাসায় চলে যায় অরিত্রি। আর তারপর ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে এই শিক্ষার্থী।’’