মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উপকূল থেকে দূরবর্তী দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরে সহায়তায় পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘ। রয়টার্সে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হযেছে।
যদিও এই স্থানান্তরের বিরোধিতা করছেন অনেক শরণার্থী এবং অনেক মানবাধিকার সংস্থার বক্তব্য এতে নতুন নতুন সমস্যার তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মতে ভাসানচরে শরণার্থীদের পরিবহন করলে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলো দীর্ঘস্থায়ী অতিরিক্ত ঠাসাঠাসির হাত থেকে রেহাই দিবে।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেছেন, ওই দ্বীপ বন্যাপ্রবণ, বারবার হতে থাকা ঘূর্ণিঝড়ে ভঙ্গুর এবং বড় কোনো ঢেউ এলে পুরোই ডুবে যেতে পারে।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থার একটি তথ্য বলছে, তারা বাংলাদেশ সরকারকে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রেরণ করেছে, সঙ্গে জানিয়েছে স্থানান্তরের সময়সীমা এবং বাজেট। সেখানে কিভাবে সপ্তাহের মধ্যে তাদের স্থানান্তর করা হবে সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পুরো স্থানান্তরই হবে স্বেচ্ছায় এবং মানবতার মূলনীতি ও আচরণের মূলনীতি মেনে।
মার্চের ১২ তারিখে প্রেরিত ডকুমেন্টের নাম দেওয়া হয়েছে, অপারেশনের ধারণা। সেখানে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে কিভাবে সংস্থাটি এবং তাদের সহযোগীরা রোহিঙ্গাদের পরিচিতি নিশ্চিত করবে, তাদের উপস্থাপনা, এগিয়ে যাওয়া, শরণার্থীদের গ্রহণ এবং ভাসানচরে তাদের স্থির অবস্থান নিশ্চিত করবে। দাতাদের কাছে ৮.৬ থেকে ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদানের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
তবে আরো বেশি পরিকল্পনা দরকার হবে কাজটি সম্পন্ন করতে, কেননা অপারেশনের ধারণা স্থানটি পর্যবেক্ষণ শেষে নির্ধারিত হয়নি এবং খুব দ্রুত পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কক্সবাজারে ডব্লিউএফপির যোগাযোগ কর্মকর্তা জেম্মা স্নোডন বলেন, সংস্থাটি চলমান আলোচনার একটি অংশ ছিলো। তবে ভাসানচরে নিরাপদে তাদের স্থানান্তর স্থায়ী করতে আরো বিশ্লেষণ দরকার রয়েছে। সেজন্য সেখানে প্রয়োজনীয় উপকরণ, অর্থনৈতিক খরচ, বিভিন্ন এলাকার সমস্যা, খাদ্য নিরাপত্তা, জরুরি টেলিকমিউনিকেশন এবং অবকাঠামোগত বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।