কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে তৈরি হওয়া উত্তেজনা নিরসনে কাজ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে সৌদি আরব।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভারত সফরের ঠিক আগে সাম্প্রতিক কাশ্মীর অস্থিরতার প্রসঙ্গ তুলে এ কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-যুবেইর।
দক্ষিণ এশিয়ায় উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফরের অংশ হিসেবে পাকিস্তানে দু’দিনের সফর শেষে মঙ্গলবার দিল্লিতে পৌঁছানোর কথা ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজের।
৭০ বছর আগে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব চলছে। বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরকে নিয়ে তৈরি হওয়া সেই দ্বন্দ্ব প্রায়ই দুই দেশের সম্পর্ক জটিল করে তোলে।
গত সপ্তাহে ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরে গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ জনের বেশি আধাসামরিক সেনা নিহতের ঘটনা উত্তেজনার আগুন আরও উসকে দেয়। যে হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদ।
পাকিস্তান এ হামলায় নিজেদের সব রকম সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও ভারতের দাবি পাকিস্তানের মদদে এ হামলা হয়েছে। বদলা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে একঘরে করার অঙ্গীকারও করেছে দেশটি।
HRH Crown Prince Muhammad Bin Salman has graciously agreed to free 2107 Pakistani prisoners in Saudi Arabia with immediate effect. Cases of the remaining will be reviewed. People of Pakistan thank HRH for responding immediately to Prime Minister Imran Khan’s request.
— Shah Mahmood Qureshi (@SMQureshiPTI) February 18, 2019
এ বিষয়ে সোমবার আদেল আল-যুবেইর বলেন, সৌদি আরবের উদ্দেশ্য হলো এই দুই দেশের মধ্যকার টানাপোড়েন কমিয়ে আনার চেষ্টা করা। সৌদি দেখতে চায় এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার বিভেদগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের কোনো উপায় বের করা যায় কিনা।
দিল্লি ইতোমধ্যেই ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কিছু অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘পাকিস্তানের মোস্ট ফেভারড নেশন’ বাণিজ্যিক সুবিধা কেড়ে নেয়া এবং পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো।
এর আগে পাকিস্তান সফরে যুবরাজ মোহাম্মদ দেশটির সঙ্গে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি করেন। পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতি ঠিকঠাক করতে সাহায্য করবে এই বিনিয়োগ।
পাকিস্তানকে এখন দ্রুতই পেমেন্ট সংকট চিহ্নিত করতে হবে সহায়তার জন্য।
এই চুক্তির মধ্যে রয়েছে বন্দর নগরীতে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তেল শোধনাগার। এর আগে দুই পক্ষ থেকেই শক্তি, পেট্রোকেমিক্যাল, খনির ক্ষেত্র বিষয়ে বেশ কিছু প্রাদেশিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
পাকিস্তানেও ভারতের সঙ্গে জটিলতা মিটিয়ে ফেলতে সহায়তা করার কথা বলেন এমবিএস নিজেই।
তিনি এবং দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান একমাত্র আলোচনার মধ্য দিয়েই সম্ভব।