অস্ট্রেলিয়ায় বোরকা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব আনতে সেদেশের ডানপন্থি ওয়ান ন্যাশন পার্টির নেতা পলিন হ্যানসন জাতীয় সিনেটে বোরকা পরে হাজির হয়েছেন। কালো একটি বোরকা পরে সিনেট কক্ষে প্রবেশ করে সোজা গিয়ে বসেন তার জন্য নির্ধারিত আসনে।
তবে অ্যাটর্নী জেনারেলের দায়িত্ব পালন করা সরকারি দলের মন্ত্রী জর্জ ব্রান্ডিস এই ‘লোক দেখানো’ কাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ায় বোরকা নিষিদ্ধ করা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষদের অনুভূতিতে এভাবে আঘাত দিয়ে আচরণ করা ঠিক হচ্ছে না।
ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ড করার আগে তিনি আরও সংশোধিত ও সতর্ক হবেন। নিজের দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা অবশ্য পলিন হ্যানসনকে বেশ সাধুবাদ জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে হ্যানসন বলেন, প্রকাশ্যে পুরো মুখমণ্ডলকে ঢেকে ফেলে এমন কাপড় ব্যবহার করা ‘নিষিদ্ধ’ করার বিষয়টি আধুনিক অস্ট্রেলিয়ায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়ায় বোরকা নিষিদ্ধের এই বিতর্ক এখনও চলমান রয়েছে।
ইউরোপের, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, সুইটজারল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রিয়া এবং জার্মানিতে বোরকা নিষিদ্ধ।
মধ্য আফ্রিকার তিনটি দেশে বোরকা নিষিদ্ধ। এগুলো হচ্ছে সাদ, গ্যাবন এবং কঙ্গো ব্রাজাভাইল। চীনের জিনজিয়ান প্রদেশে লম্বা দাড়ি ও বোরকা নিষিদ্ধ।
তুরস্কে বহু দশক ধরে বোরকা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে ক্ষমতাসীন এ কে পার্টি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
সিরিয়াতেও বোরকা পড়ার বিরুদ্ধে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে ২০১১ সালে সেখানে শিক্ষকদের নিকাবে মুখ ঢাকার অনুমতি দেয়া হয়।
তিউনিসিয়াও ২০১১ সালে মাথা এবং মুখ ঢাকার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এর আগে পর্যন্ত তিউনিসিয়ায় বোরকা এবং হিজাবের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ছিল বেশ কঠিন। এমনকি রাস্তায় কাউকে হিজাব পরিহিত অবস্থায় দেখলে পুলিশ তাকে থামিয়ে হিজাব খুলে নেয়ার নির্দেশ দিত।
বোরকা পড়ার বাধ্যবাধকতা মধ্য প্রাচ্যের ইসলামিক দেশগুলোতে বেশি। বিশেষ করে সৌদি আরবের নারীদের সব থেকে বেশি পর্দা করতে হয়। সেখানে নারীরা পুরুষের অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে পারেন না।