জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য বা এমডিজির আটটি লক্ষ্যের প্রায় সবক’টি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এমডিজি নিয়ে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার গঠনের পর থেকেই লক্ষ্য অর্জনের ব্যাপারে তার সরকার সক্রিয় ছিলো। এ কারণেই সফল হয়েছে বাংলাদেশ।
১৫ বছর আগে বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে আটটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে জাতিসংঘ। দারিদ্র্য বিমোচন, মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো, নারী-পুরুষের সমতা এবং সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষাসহ সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের সময়সীমা ঠিক করা হয় ২০১৫ সাল।
বিশ্বব্যাপী লক্ষ্য অর্জনের চিত্র মিশ্র হলেও সবক’টি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বড় সাফল্য অর্জন করেছে। বিবিসি’র প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এই অর্জন নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, খুব শিগগিরই আমাদের সরকার সহস্রাব্দ উন্নয়নের যেসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে সেসব প্রয়োগ করেবে। বর্তমানে আমরা এক থেকে ছয়টি এমডিজি লক্ষ্য অর্জন করেছি। আর এই সব অর্জনে আমরা অনেক কাজ করেছি। কাজেই বলা যায় বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করছে।
বিবিসির প্রতিবেদনের মূল বিষয়ই ছিলো নারী শিক্ষা ও বাল্য বিবাহ। নারী শিক্ষায় সরকারের নানা পদক্ষেপের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে বাল্য বিবাহ। প্রধানমন্ত্রী জানান, আইন করে সব কিছু সম্ভব নয়, এজন্য দরকার নারীদের জন্য সুযোগ তৈরি করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে আমাদের বেশ কিছু ঝরে পড়া মেয়ে শিক্ষার্থী আছে। কিন্তু আমরা এই বিষয়ে মেয়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি। যেমন অালাদা টয়েলেট, বিশ্রাম কক্ষ. মেয়েদের জন্য আলাদা শ্রেণিকক্ষ আমরা ইতিমধ্যেই তৈরি করা শুরু করেছি। তাই এখন অনেক অভিভাবক তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন।
‘আমারা সব শিক্ষার্থীককে বিনামূল্যে পাঠ্যবই দিয়েছি। এখন আর অভিভাবকদের ছেলে মেয়েদের বই এর জন্য কোনো টাকা খরচ করতে হয়না। আমরা সেই দায়িত্ব নিয়েছি,’ বলে জানান তিনি।
এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সমাজে কিছু সামাজিক কুসংস্কার ও বাধা কাজ করে। কিন্তু যখন কোনো মেয়ে যথাযথ শিক্ষা ও মৌলিক স্বাধীনতা পাবে তখন এই সমস্য নিজেই কমে যাবে। শুধু আইন পাশ করে ও এর প্রয়োগ করে জোরপূর্বক এই বাল্য বিবাহ বন্ধ করা যাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন: এর জন্য আমাদের দেশের মেয়েদের সুযোগ দিতে হবে, এই সুযোগ ও তার জন্য যথাযথ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তখনই অভিভাবকরা চিন্তা করতে পারবেন যে বিয়েই মেয়েদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়।