বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশের ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ৩০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনা সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, এর ফলে দেশের রফতানি আয় ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পাবে এবং এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
উৎপাদনমুখী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য নিরসনের সাথে প্রত্যেক নাগরিকের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কর্মকৌশল, নীতি ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সপ্তম পাঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গড়ে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ২০২০ সাল নাগাদ ৮ শতাংশে পৌঁছাবে।
‘সপ্তম পাঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাঁচ বছর মেয়াদে প্রবাসে ২০ লাখসহ ১ কোটি ২৯ লাখ অতিরিক্ত কর্মসংস্থান হবে। এ সময়ে ৯৯ লাখ শ্রমিক কর্মশক্তিতে যোগদান করবে।’
তিনি বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বেকার যুবদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে বিগত ৯ বছরে ২২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৬ জন যুবকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত যুবদের জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও ঋণ কর্মসূচির আওতায় বিগত ৯ বছরে ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯১ জনকে ৮১৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে এবং ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯১ জন যুব সফল স্বাবলম্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ‘ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় ২৪ থেকে ৩৫ বছর বয়সী এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও তদূর্ধ্ব শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন বেকার যুবক ও যুবমহিলাদের ১০টি সুনির্দিষ্ট মডিউলে ৩ মাস মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদানের পর জাতি গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।
‘এ পর্যন্ত ৭ পর্বে মোট ৩৭ জেলার ১২৮টি উপজেলা ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতাভুক্ত হয়েছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এ যাবত মোট ১ হাজার ৭২১ কোটি ৭১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩২ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৭ জন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায় ২ বছরের অস্থায়ী কর্মে নিযুক্ত হয়েছে।
অস্থায়ী কর্ম শেষে এদের মধ্যে মোট ৩৭ হাজার ৪২৩জন স্বাবলম্বী হয়েছে। এছাড়া ২ বছরের অস্থায়ী কর্মসংস্থান সমাপ্তকারী ৮৫ হাজার ৩২৪ জনের প্রত্যেককে ৪৮ হাজার টাকা করে মোট ৪০৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা সঞ্চয় ফেরত দেয়া হয়েছে। এরফলে তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠেছে।’