নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা বিধির গেজেট বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে ২ জানুয়ারি ২০১৮। দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আদেশের এই দিন ধার্য করেন।
এসময় আদালত বলেন, বিষয়টি আমারা যেহেতু ফুল কোর্ট (আপিল বিভাগের ৫ জন বিচারপতি) শুনেছি। আজ একজন বিচারপতি অনুপস্থিত। তাই আগামি ২ জানুয়ারি বিষয়টির পরবর্তী তারিখ রাখা হল।
এসময় আদালতে রাষ্টপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এর আগে গত রোববার আদালত নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা বিধির গেজেট প্রকাশে বুধবার পর্যন্ত সময় দেন। তবে সোমবারই গেজেট প্রকাশ করে সরকার। আজ সেই গেজেট আদালতে উপস্থাপনের কথা ছিল।
এদিকে প্রকাশিত গেজেটের বিধির ব্যাপারে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আসে।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘গেজেট প্রকাশ হওয়ায় একটি বিব্রতকর অবস্থার পরিসমাপ্তি হয়েছে।’
আর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘গেজেট প্রকাশ করায় সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন করা হয়নি বরং কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তবে গেজেট প্রকাশের পর সাবেক আইনমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ‘মৃত্যু’ ঘটেছে।’
এদিকে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় এই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তা সাংধিানিকভাবে বৈধ প্রক্রিয়ায় নয়। এই গেজেটের গোড়াতেই গলদ রয়েছে।’
এর আগে এই গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারকে বহুবার সময় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট।
তবে এর আগে বিধিমালায় আপত্তি জানিয়ে তা ফেরত পাঠিয়েছিলেন পদত্যাগ করা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি খসড়া বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়। কিন্তু গত বছরের ২৮ আগস্ট আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।
এরপর সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একই সঙ্গে ৬ নভেম্বর ২০১৬ এর মধ্যে খসড়া বিধিমালা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানাতে আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে খসড়া বিধিমালা প্রকাশের জন্য বার বার সময় নেয়া হয়।