মুঠোফোনে বিকাশ জালিয়াতি করে প্রতি মাসে প্রায় আশি হাজার থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্র। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ও মহাখালী থেকে অভিনব পন্থায় বিকাশের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদে এসব তথ্য জানায় এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান-র্যাব।
সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা’য় র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ও মহাখালী থেকে প্রতারক চক্রের সদস্য মোঃ নাসির হোসেন (২২), মোঃ রাসেল (২২), মোঃ হানিফ (২০), মোঃ শাহাব উদ্দিন (২০) কে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই চক্রের সদস্যরা তাদের নিজেদের একটি নাম্বারে বিকাশ করার সময় কৌশলে এস.ভি.আর. (সিক্রেট ভিডিও রেকর্ডার) ব্যবহার করে বিকাশ রেজিস্ট্রারের ছবি তুলে নেয়। সংগৃহীত ছবি তারা গ্রুপ লীডার এর নিকট পাঠিয়ে দেয়ার পর উক্ত রেজিস্ট্রারে থাকা গ্রাহকদের মধ্যে কয়েকজনকে টার্গেট করে।
র্যাব জানায় এই চক্রটি ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে লেনদেনের টাকার চেয়ে বেশি টাকার এসএমএস তৈরী করে এসএমএসটি টার্গেটধারী ব্যক্তির মোবাইলে পাঠায় যা মেসেজের প্রেরক হিসাবে বিকাশ লেখা দেখা যায়। পরে ভুক্তভোগীকে জানালে, তিনি বিকাশের অরিজিনাল মেসেজ হিসাবে তা বিশ্বাস করে প্রতারকদের আহ্বানে সাড়া দেয়।
র্যাব আরো জানায়, প্রতারকচক্রটি ভুক্তভোগীকে তার নিকটআত্মীয় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাই জরুরী টাকার প্রয়োজন ইত্যাদি বুঝিয়ে দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য বাধ্য করে। চক্রটি এভাবে প্রতিমাসে গড়ে আশি হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা প্রতারণা করে সংগ্রহ করছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা আরো জানায়, চক্রের মুলহোতারা ফরিদপুর, গাইবান্ধা ও কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে গ্রামের নিরীহ মানুষের নিকট থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়েও নিচ্ছে।
‘তারা ফেসুবক ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে পুরাতন মালামাল বিক্রির জন্য আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাকে আকর্ষণ করার পর পণ্যের ২০% টাকা অগ্রিম বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য বলে। টাকা পাওয়ার পর তারা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য ক্রেতার ঠিকানায় পৌঁছে দেবে এবং তখন অবশিষ্ট টাকা পণ্য হাতে পাবার পর পরিশোধ করতে হবে। এভাবে ক্রেতা রাজি হয়ে অগ্রিম অর্থ পাঠানোর পর তারা সিমটি পরিবর্তন করে ফেলে।’
প্রতারক চক্রটির সঠিক ঠিকানা যাতে চিহ্নিত করা না যায় সেজন্য তারা দরিদ্র, মাদকাসেবীদের কাছ থেকে ১০০ টাকার সিম ৫০০ টাকা বা তারও অধিক টাকায় সিম কিনে এ ধরনের অপরাধ করে আসছিল। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থ্যা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় র্যাব।