Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

বিএনপির এমপিদের শপথ নেবার বিষয়ে যা বললেন রিজভী

ধানের শীষের এমপিদের শপথ নিতে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘বিএনপির কোনো এমপি’কে শপথ নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো চাপ নেই। তার এই বক্তব্যের পর জনগণ নিশ্চিত হয়েছে যে, ধানের শীষের প্রার্থীদের চাপ দেয়া হচ্ছে শপথ নিতে।

সোমবার নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার চাপে গোটা জাতিই তো পাথরচাপা হয়ে প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক জীবনে যেটি প্রমান করেছেন-তিনি মুখে যেটি বলবেন, কাজে সেটির উল্টোটাই করবেন। চাপ নেই বলার একদিন পরেই গত পরশু আবারো তার কথার প্রমাণ পাওয়া গেছে-অবশ্যই চাপ আছে। চাপ দেয়া হচ্ছে। জুলুম-জবরদস্তি করা হচ্ছে।

তিনি দাবি করেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ধানের শীষের নির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া গত পরশু তার এলাকায় বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনময় সভা করছিলেন। তিনি যখন ঘোষণা দেন, ’দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নিবেন না।’ তারপরে সরকারের একটি সংস্থার কয়েক ব্যক্তি উকিল আবদুস সাত্তারকে সেই সভা থেকে নিরিবিলি কথা বলার জন্য নিয়ে যেতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। ঐ সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা আমাদের জানিয়েছেন, সেখান থেকে উকিল আবদুস সাত্তার সাহেবকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে তারা সফল হয়নি। কেবল উকিল আবদুস সাত্তারই নন, অন্য এমপিদেরও চাপ দেয়া হচ্ছে শপথ নিতে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, ভোটার বিহীন মিডনাইটের সংসদকে বৈধ করতে বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের জোর করে শপথ গ্রহণ করিয়ে বৈধতা পাওয়া যাবে না। ৩০ ডিসেম্বর কোন নির্বাচনই হয়নি। ভোট দিতে পারেননি দেশের ভোটাররা। জনগণ এই নির্বাচন এবং তথাকথিত সংসদকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং এমপি ভাগিয়ে এনে বৈধতা নেয়ার অপচেষ্টা করে বৈধতা পাওয়া যাবে না। জনগণের কাছে আরো ধিকৃত হতে হবে। এই মিডনাইট ভোটের কলঙ্ক মুছতে হলে অতি দ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন।

সোমবার ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন শপথ নেওয়ার পর তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে ২৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান জাহিদ শপথগ্রহণ করেন। পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে মাত্র ৮টি আসন পায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নির্বাচিত ৮ জনের মধ্যে ৬ জন বিএনপির আর দু’জন গণফোরামের।

গণফোরামের দুই সংসদ সদস্যের মধ্যে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে বিএনপির প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেন। সিলেট-২ আসন থেকে গণফোরামের প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত মোকাব্বির খানও গত ২ এপ্রিল শপথ নেন।

এখন শপথের বাইরে আছেন শুধুমাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

Exit mobile version