প্রতি বছর বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। আর এ রোগে মারা যায় ৭ হাজারেরও বেশি। কিন্তু ভয়াবহ এই প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত একজন মানুষ পরিবার, সমাজ এবং সরকারের কাছ থেকে কতটা সহমর্মিতা ও সহায়তা পাচ্ছেন তার বাস্তব চিত্র একটি দুশ্চিন্তার বিষয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ ও গবেষণা কেন্দ্র (সিসিপিআর) আয়োজিত ‘স্তন ক্যান্সারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় এ তথ্য জানানো হয়। স্তন ক্যান্সারের ভয়াবহ প্রভাব ও সামাজিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম, এর উদ্যোক্তা সিসিপিআর এবং মোর্চাভুক্ত বিভিন্ন সংগঠন অক্টোবর মাস জুড়ে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে।
আলোচনায় বক্তারা জানান, গত ১০ অক্টোবর স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবসে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের অংশগ্রহণ ছিল প্রত্যাশাতীত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। শহরের সীমানা পেরিয়ে সচেতনতা কার্যক্রমকে এখন বিস্তীর্ণ জনপদের প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।
স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষগুলোর শারীরিক যন্ত্রণা ও সামাজিক অসহযোগিতার পাশাপাশি ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা’র সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অঙ্গীকারে স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশের দরিদ্র ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা-ব্যয় লাঘবে রাষ্ট্রের কী ধরণের সাহসী পদক্ষেপ নেয়া দরকার এবং বিকল্প অর্থায়নে কী করা যেতে পারে – এ ধরণের প্রশ্ন সামনে নিয়ে আয়োজিত হয় মুক্ত আলোচনাটি।
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদশের নারীদের মধ্যে প্রথম অবস্থানে আছে স্তন ক্যান্সার। নারী-পুরুষ মিলিয়ে হিসেব করলেও স্তন ক্যান্সারের স্থান শীর্ষে, প্রতি বছর নতুন করে আক্রান্তের হার এবং মৃত্যুর হার – দুই ক্ষেত্রেই।
বাংলাদেশের জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালভিত্তিক ক্যান্সার নিবন্ধনের ২০১৪ সালের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, নারী ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (২৭.৪%) স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই ক্যান্সারের স্থান দ্বিতীয় (১২.৫%)। এক্ষেত্রে শীর্ষে অবস্থান ফুসফুসের ক্যান্সারের (১৭.৯%)। স্তন ক্যান্সারের রোগীদের গড় বয়স প্রায় ৪৩ বছর।