কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শিদলাই গ্রামে বাড়ির পাশের বাঁশের মাচা থেকে রমিজ আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের মনসুর আলীর পুত্র এবং স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বড়দলের’ সমর্থক।
বুধবার সকালে লাশ উদ্ধারের পর শিদলাই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবীদ্বার সার্কেল) শেখ সেলিমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর গ্রামটিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত হন ২জন। তারা ‘ছোটদলের’ সমর্থক ছিলেন। এ ঘটনার ১০ দিনের ব্যবধানে উদ্ধার হলো বড়দলের একজনের লাশ। এছাড়াও গতবছর দু’গ্রুপের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষে নিহত হন ‘বড়দলের’ লিডার মফিজুল ইসলাম। আগের এসব সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা চলছে।
রমিজ আলীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, মামলায় গ্রেফতার এড়াতে এবং প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলার ভয়ে তিনি বাড়ির পাশের পুকুরের এক কোণে বাঁশের মাচা পেতে রাত্রী যাপন করতেন। পেশায় জেলে রমিজ আলী দুই পুত্র ও দুই কন্যার জনক।
নিহত রমিজ আলীর স্ত্রী ঝর্না আক্তার জানান, ‘মঙ্গলবার রাতে সবার অগোচরে সে পুকুর পাড়ের মাচায় ঘুমাতে যায়। ভোরে সেখানে ধস্তাধস্তি ও গোঙ্গানির আওয়াজ শুনে আমি ও বাড়ির অন্য মহিলারা গিয়ে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখি।’
ঝর্নার দাবি, ‘ওই সময় ‘ছোটদলের’ লোকজন তার স্বামীর উপর ছুরি ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায়। আর এতেই মারা যান রমিজ।’
ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রমিজ আলীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। সে (রমিজ) খোরশেদ হত্যা মামলার আসামী। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে আরো ৫টি মামলা রয়েছে।’
তিনি বলেন- ‘শুনেছি আগের ঘটনার পর থেকেই রমিজ আলী গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন স্থানে রাত্রি যাপন করতো। তার মৃত্যুটি হত্যাকাণ্ড কি না, এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক নারীকে আটক করা হয়েছে।’
অপরদিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ সেলিম বলেন, স্থানীয় চিকিৎসক ও আশপাশের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি হঠাৎ করে প্রেশার বেড়ে যাওয়ার কারণেই রমিজ আলী মারা গেছেন। লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।