দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বন্যার পানি সামান্য কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি। যেসব অঞ্চলে পানি কমেছে সেখানে চলছে বিশুদ্ধ পানি আর খাবারের তীব্র সংকট। এরই মধ্যে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর। কয়েক হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে গেছে বন্যার কারণে।
রংপুর:
রংপুরের ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। কোথাও কোথাও ১০ থেকে ১৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে বসতি এলাকা। মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পুল-কালভার্টসহ উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
গাইবান্ধা:
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র,ঘাঘট নদীর পানি কমতে শুরু করলেও করতোয়ার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে নতুন করে ১০ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে বগুড়া-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর।
কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি এখনও বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অপরিবর্তিত রয়েছে। সরকারি হিসাবে জেলার ৯ উপজেলার ৮শ ২০টি গ্রামের ৪ লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দী জীবন-যাপন করছে।
নেত্রকোনা:
নেত্রকোনায় বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট চলছে। পানির তোড়ে নেত্রকোণা-কলমাকান্দা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় অভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত ৯টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ৩ উপজেলায় ত্রাণ পৌঁছেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
জামালপুর:
জামালপুরে যমুনার পানি সামান্য কমতে শুরু করেছে। তবে ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় সার্বিক পরিস্তিতির তেমন কোন উন্নতি হয়নি। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় নতুন করে ১শ’ ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। এই নিয়ে মোট ৯শ’ ৬৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে পড়েছে এই জেলায়। ক্ষতিগ্রস্থ কমপক্ষে ৭ লাখ মানুষ।
ঠাকুরগাঁও:
ঠাকুরগাঁওয়ে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো ঘরে ফেরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি । স্থানীয় প্রশাসন বলছে, বন্যা কবলিত মানুষের খাবার এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের তালিকা করা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও বৃহস্পতিবার বিকাল নাগাদ পানি কমতে থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
দিনাজপুর:
দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি’র উন্নতি হয়েছে। তবে গৃহহীন প্রায় ৬ লাখ বানভাসি মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে। বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বানভাসি মামুষের মধ্যে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন এক’শ ২৫টি স্বাস্থ্য ক্যাম্প খুলেছে এই জেলায়।
বগুড়া:
বগুড়ায় ৬৩টি গ্রামের ১৯ হাজার পরিবারের প্রায় ৯০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পানিবন্দী অবস্থায় আছে।