মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ঈদুল আযহার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে চাঁদ দেখে, ১২ আগস্ট সারাদেশে ঈদ উদযাপিত হবে। রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায়, নয়তো এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মানুষ ঈদ করতে সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথে যাত্রা করে। নির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হয় ঈদের সময় অন্তত ৫০ লাখ মানুষ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মাত্র ৬/৭ দিনের ব্যবধানে এতো লোকের ঈদযাত্রার জন্য প্রতিবছর দুইবার ঘটনাবহুল থাকে পুরোদেশ।
ইতিমধ্যে গ্রাম-গঞ্জে ঈদ করতে যাবার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। অনেকে আগেভাগে রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরুও করেছে। বাসের ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট মাত্র ২/৩ দিনে শেষ হয়ে গেছে, ট্রেনের টিকিট যেনো সোনার হরিণ। তারপরেও বাড়ি যেতে হবে, এই কথাকে মাথায় রেখে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের রয়েছে নানা প্রস্তুতি। কিন্তু রেল, সড়ক-মহাসড়ক কি প্রস্তুত?
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বন্যাকবলিত জেলার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বন্যার কারণে অনেক জেলার সড়ক ও রেলপথ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে সরকার বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিলেও এখনও সেসব পথ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে উন্নয়ন কাজ দীর্ঘসময় ধরে চলার কারণে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে প্রতিবছরই তৈরি হয় মারাত্মক যানজট। প্রতিবছরই কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন যে, ঈদযাত্রায় কোনো সমস্যা হবে না। তারপরেও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয় না।
এবারের ঈদ যেহেতু কোরবানীর ঈদ, সেজন্য বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক আশেপাশে কোরবানীর পশুর হাট বসে। সে কারণে ক্রেতা-বিক্রেতা আর তাদের যানবাহনের কারণে তৈরি হয় যানজট। পশুর হাটের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসন নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দিলেও স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে অনেক অবৈধ হাটের আগমন হয়। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
ঈদযাত্রায় প্রতিবছরই বিভিন্ন কারণে দুর্ঘটনা ঘটে, প্রাণ হারায় অনেকে। মহাসড়কে চলার অনুপযোগী বাহন চলা, ট্রেনের ছাদে উঠা, নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী বহনসহ নানা প্রচলিত কারণে এসব হয়। প্রশাসন প্রতিবছরই নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় সড়ক-মহাসড়কে থাকলেও ক্রমবর্ধমান জনচাপে দুর্ঘটনা কমবেশি হয়েই থাকে। শুধু প্রশাসনের দিকে না তাকিয়ে সাধারণ জনগণ যারা যাত্রা করে থাকেন, তাদেরও কর্তব্য রয়েছে এসব বিষয়ে সাবধান হওয়ার। ‘ঈদে বাড়ি যেতে হবে’ এই প্রতিযোগিতায় মহামূল্যবান জীবন যেন হুমকিতে না পড়ে ঈদযাত্রায়।