বছরের পর বছর ধরে কমে আসছে সিনেমা হলের সংখ্যা। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি বলছে, সারাদেশে বর্তমানে চালু আছে এমন সিনেমা হলের সংখ্যা মাত্র ১২০টি! আর ঈদ উৎসব ঘিরে সেই সংখ্যা গিয়ে ঠেকে বড়জোর ২০০তে! বছর জুড়ে বড় বাজেটের সিনেমা ও বড় তারকাদের সিনেমা না আসায় দর্শক শূন্য থাকে হলগুলো, এতে লোকসান গুণতে থাকেন হল মালিকরা।
বাংলা সিনেমার নিয়মিত দর্শকদের অভিযোগ, যেসব সিনেমা হল বর্তমানে চালু আছে সেগুলোর অবস্থা একেবারে বাজে! বিশেষ করে রাজধানীর বাইরে সিনেমা হলের পরিবেশ খুবই নাজুক। ছারপোকার কামড়, টয়লেটের দুর্গগ্ধ, নষ্ট সিলিং ফ্যান, ভাঙা চেয়ার সবমিলিয়ে হলে পরিবেশ ভালো না হওয়ায় ইচ্ছে থাকা সত্বেও সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা উপভোগ করতে পারেন না।
আরও অভিযোগ, সিনেমা হলের বাজে পরিবেশ দর্শকদের হল বিমুখ হওয়ার অন্যতম বড় কারণ। দর্শকদের এমন অভিযোগ স্বীকার করে রবিবার দুপুরে প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আউলাদ হোসেন উজ্জল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, স্টার সিনেপ্লেক্স ও বগুড়া-চট্টগ্রামের দু-তিনটি হল ছাড়া দেশের কোনো হলের পরিবেশ দর্শক যাওয়ার উপযোগী নেই।
প্রদর্শক সমিতির এই নেতার কথা, সরকার চার শতাংশ সুদে পাঁচ কোটি ও দশ কোটি টাকা করে হল মালিকদের লোন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। হয়তো আগামী বছর পাওয়া যাবে। যত দ্রুত এই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে ততো দ্রুত সিনেমা হলের পরিবেশ ঠিক হবে। পাশাপাশি উন্নত মানের হলের সংখ্যাও বাড়বে। তবে নির্মাতাদের সময় উপযোগী সিনেমা দিতে হবে।
আউলাদ হোসেন আরও বলেন, সিনেমার ব্যবসা ভালো করতে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুটি করে ভালো মানের সিনেমা লাগবে। দুই ঈদের ব্যবসা দিয়ে বছর জুড়ে সিনেমা হলের ব্যবসায় লাভ হয় না। বড় আয়োজনের সিনেমা ছাড়া দর্শক এখন দেখে না। হাতে হাতে স্মার্টফোন থাকায় দর্শকদের সিনেমা হলে টেনে আনা কঠিন। এরপরেও যদি পরিবেশ নোংরা হয় তাহলে কেন আসবে দর্শক?
কমার্শিয়াল সিনেমার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিনেমা হল ব্যবসা জমিয়ে রাখতে হলের পরিবেশ ঠিক করার পাশাপাশি কমার্শিয়াল সিনেমা লাগবে। যারা নিয়মিত সিনেমা দেখে যায় তারা কমার্শিয়াল সিনেমা দেখতে চায়। শুনেছিলাম ‘মিশন এক্সট্রিম’ বড় আয়োজনের ভালো সিনেমা। কিন্তু মুক্তির দুদিন পর থেকে ঢাকার বাইরে কোনো হলে ভালো চলেছে, এমন খবর পাইনি।
তবে একাধিক চলচ্চিত্র নির্মাতা চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, ভালো সিনেমা তৈরি হচ্ছে। অনেকগুলো ভালো সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এগুলো যদি সঠিকভাবে প্রদর্শন করা যায়, তবে ঘুরিয়ে দিতে পারে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় থাকা বাংলা সিনেমা। এজন্য হলের পরিবেশ উন্নত করতে হবে। ঢাকার বাইরে হলগুলোতে বাজে পরিবেশের কারণে ভালো সিনেমাগুলো মার খাচ্ছে।