গণমাধ্যম কি আসলেই প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ভেতরের অনেক খবর তুলে ধরতে পারেনি? সাংবাদিকতার একজন শিক্ষক এরকম বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছেন। অন্য একজন শিক্ষক বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে দেশের গণমাধ্যম বিস্তারিত তুলে ধরতে পারেনি।
তারা বলছেন, সরকারেরই দায়িত্ব ছিল গণমাধ্যমকে জানানো। তবে খবর জানানোর সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি বলেও মনে করছেন তারা।
শনিবার বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকের পর তাদের উপস্থিতিতে প্রতিরক্ষা, ঋণ, মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে মোট ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এসব চুক্তির ব্যাপারে গণমাধ্যম কি সব খবর জানাতে পেরেছে? নাকি শুধু চটকদার বক্তৃতা-বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ ছিল কাভারেজ?
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি আর রাজী।
‘এখানে আমি গণমাধ্যমের কোন ব্যর্থতা দেখি না। তবে খবর জানানোর সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আর চুক্তি সম্পর্কে জানানো সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে চুক্তি ও সমঝোতা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাবে বলে আমি আশা করি।’
আর রাজী
‘তাছাড়া সমাজের একটি বড় অংশ চায় সরকারের যেন কোন ক্ষতি না হয়। এবং বুদ্ধিজীবী মহল মনে করে শেখ হাসিনা ছাড়া সামনে ভালো কোন সুযোগ নেই। তাই এসব ব্যাপার প্রকাশ করেন না। সবাই নিজেদের স্বার্থে সরকারের গুণগান করছেন।’
প্রায় সাত বছর পর ভারত সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তির প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু সফরের আগেই স্পষ্ট হয়ে যায় অন্ততঃ এবার এরকম কোন চুক্তি হচ্ছে না।
এজন্য সরকারের ব্যর্থতার পাশাপাশি চুক্তি ও সমঝোতার মধ্য দিয়ে ‘দেশের যা বাকি ছিলো সবকিছু সরকার বিক্রি করে দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরকম বক্তব্যকে ‘অর্বাচীনতা’ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক চুক্তি সংসদে উপস্থাপন না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
টিআইবি ট্রাস্টিবোর্ডের সভাপতি সুলতানা কামাল বলেছেন: আমিতো মনে করি– এসে নয়, যাওয়ার আগেই কী কী চুক্তি হবে, তাদের সঙ্গে কী কী কথাবার্তা হবে বা কী বৃত্তান্ত হবে যেগুলো জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে জড়িত নয়, জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে জড়িত সেগুলোতো সংসদে আলোচনা হওয়া উচিত বা জনগণকে জানানো উচিত বলেই আমরা মনে করি।