বিপিএলের পঞ্চম আসরে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে বোলাররা ভালো করলেও হতাশ করেছেন ব্যাটসম্যানরা। আবার সেরা বোলারদের তালিকায়ও অনেক তারকার নাম নেই। অপ্রত্যাশিতভাবে এবার যারা প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি, তাদের নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের এই আয়োজন।
মুশফিকুর রহিম: জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সবাই বিপিএলের ফাইনাল খেলেছেন। মাশরাফী শিরোপা নিয়েছেন চারবার, সাকিব একবার। বিপিএলে দুর্ভাগা মুশফিকুর রহিম। একবারও ফাইনাল খেলতে পারেননি। এবার উঠতে পারেননি শেষে চারেও। দল ভাল না করলেও একটা সুনাম ছিল ব্যাটে হাতে ঠিকই দায়িত্বটা সামলান। সেই সুনামটা ধরে রাখতে পারননি এবার। বিপিএলে সবার আগে ১ হাজার রান পূর্ণ করা মুশফিক রাজশাহী কিংসের হয়ে এবার ১২ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১৮৫ রান। ১১ ইনিংসে ফিফটি মাত্র একটি। গড় ১৮.৫০। নির্ভরযোগ্য এ ব্যাটসম্যানের নামের পাশে যা বড্ড বেমানান!
সৌম্য সরকার: সাউথ আফ্রিকা সফরে ভাল কয়েকটা ইনিংস খেললেও বারবারই পঞ্চাশের আগে ফিরেছেন। ৩০ পার হওয়ার পরই কী যেন হয়ে যেত! ঘরের লিগ বিপিএলে এ বৃত্ত ভাঙতে চেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। এবারও হল না। ১১ ম্যাচে করেছেন ১৬৯ রান। গড় ১৫.৩৬। সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৮ রানের।
আরাফাত সানি: ব্যক্তিগত নানা ঝামেলায় ক্রিকেট ক্যারিয়ার পড়েছিল হুমকির মুখে। তবে মানসিকভাব শক্ত থাকতে পেরেছিলেন বলেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে করতে পেরেছিলেন দারুণ বোলিং। মুড়ি-মুড়কির মতো ফেলেছেন উইকেট। বিপিএলে তাই চোখ ছিল তার দিকেও। কিন্তু প্রত্যশা মেটাতে পারেননি এই বাঁহাতি স্পিানর। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ৪ ম্যাচে ৮ ওভার বল করে ৬৪ রান দিয়েছেন। পাননি কোনো উইকেট।
শাহরিয়ার নাফীস: রংপুর রাইডার্সের মিডলঅর্ডারের অন্যতম কান্ডারি হতে পারতেন শাহরিয়ার নাফীস। শুরুতে নামা গেইল-ম্যাককালামরা জ্বলে উঠতে পারছিলেন না। ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছে পাওয়া প্লে’র ওভার শেষ হওয়ার আগেই। সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি প্রিমিয়ার লিগ ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের এই নিয়মিত পারফরমার। ৮ ম্যাচে নামের পাশে মাত্র ১০৮ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৫ রানের। গড় ১৩.৫০।
মোস্তাফিজুর রহমান: চোট কাটিয়ে ফেরেন বিপিএলের মাঝামাঝি সময়ে। শুরুর ম্যাচেই পান ২ উইকেট নিয়ে। পরের ৪ ম্যাচে পেয়েছেন আর ২ উইকেট। ৫ ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছেন ৪টি। ১৯.১ ওভার বল করে দিয়েছেন ১৬১ রান। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৮ রানের বেশি।
তাইজুল ইসলাম: বাঁহাতি স্পিনে সাকিব আল হাসান ছাড়া কেউই ভাল করতে পারেননি। ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টর সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক। তাইজুল ইসলামের কাছেও ছিল ভাল কিছুর প্রত্যাশা। কিন্তু তা মেটাতে পারেননি সিলেট সিক্সার্সের এ বাঁহাতি স্পিনার। ৮ ম্যাচে নিয়েছেন মাত্র ৫ উইকেট। সেরা বোলিং ১৯ রানে ৩ উইকেট। ২১.৩ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ১৮২ রান। ইকোনমি প্রায় সাড়ে আট।
মেহেদী মারুফ: বিপিএলের গত আসরে ঢাকা ডায়নামাটসকে শিরোপা জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন মেহেদী মারুফ। ১৩৫ স্ট্রাইক রেটে ১৪ ম্যাচে এ ওপেনার করেছিলেন ৩৪৭ রান। আগের বারের সঙ্গে এবারের কোনো মিল নেই। ৬ ম্যাচে মাত্র ৫৪ রান। গড় মাত্র ৯। স্ট্রাইকরেট একশ’র নিচে। শুরু ও শেষের ম্যাচে আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই!
সুযোগ পাননি যারা: বিপিএলে ৫ বিদেশি খেলায় বঞ্চিত হয়েছেন দেশি ক্রিকেটাররা। খড়গ নেমেছে কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারের ওপর। সেভাবে ম্যাচ পাননি আব্দুর রাজ্জাক (২ ম্যাচ), অলক কাপালী (৪ ম্যাচ), সোহরাওয়ার্দী শুভ (১ ম্যাচ)।
অভিষেক হয়েছে যাদের: অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কম সুযোগ পাওয়ার বিপরীতে একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারের অভিষেক হয়েছে এবারের বিপিএলে। তাদের মধ্যে অনেকেই ভাল করেছেন। অভিষিক্ত ক্রিকেটাররা হলেন- কাজী অনিক (রাজশাহী কিংস), মেহেদী হাসান (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স), ইবাদত হোসেন চৌধুরী (রংপুর রাইডার্স), হোসেন আলী (রাজশাহী কিংস), খালিদ আহমেদ (ঢাকা ডায়নামাইটস), নাঈম হাসান (চিটাগং ভাইকিংস), মেহেদী হাসান রানা (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।