একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু, ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণ এবং সমন্বয় কমিটি ও সেল গঠন করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সভায় পুলিশ প্রধান আইজি ড. মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারীসহ ৬ সদস্যের পর্যবেক্ষণ কমিটি এবং র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদসহ ৮ সদস্যের সমন্বয় সেল গঠন করা হয়।
পুলিশ প্রধান ছাড়াও কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন অতিরিক্ত আইজিপি (অ্যাডমিন অ্যান্ড অপারেশনস) মোখলেসুর রহমান। সদস্য সচিব ডিআইজি (অপারেশনস) আনোয়ার হোসেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অতিরিক্ত আইজিপি (ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজিপি (টিঅ্যান্ডআইএম) ইকবাল বাহার ও এআইজি (অপারেশনস) সৈয়দ তরিকুল হাসান।
এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। সেখানে গঠিত সেল সদস্যদের আলাদা এলাকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
র্যাব মহাপরিচালক ( ডিজি) বেনজীর আহমেদ ও হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম রাজশাহী মেট্রোপলিটন, রংপুর মেট্রোপলিটন, রাজশাহী রেঞ্জ ও রংপুর রেঞ্জে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করবে।
ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া ও কাউন্টার টেররিজমের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের উপ-কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ারদারকে দেয়া হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন, ঢাকা রেঞ্জ ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের দায়িত্ব।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত আইজিপি মীর শহীদুল ইসলাম ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলামকে খুলনা মেট্রোপলিটন, বরিশাল মেট্রোপলিটন, খুলনা রেঞ্জ ও বরিশাল রেঞ্জের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি হাবিবুর রহমানকে দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন, সিলেট মেট্রোপলিটন, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও সিলেট রেঞ্জের দায়িত্ব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রীক পুলিশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার যে কার্যক্রম তা সমন্বিত করার জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একটা কেন্দ্রীয় কমিটি করা হয়েছে। কমিটির কাজ হবে পর্যবেক্ষণ এবং সমন্বয় করা।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা, নির্বাচন কেন্দ্রীক নানা রকম দায়িত্ব পালন, সকল প্রকার ব্যবস্থাপনার সমন্বয় করবে এই কমিটি ও সেল। প্রতি নির্বাচনের আগেই এমন কমিটি ও সেল পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গঠন করা হয়।
কমিটি ও সেলের কার্যক্রম
নির্বাচন কমিশনের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিপালন।
নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর থেকে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।
শান্তিপূর্ণ সুশৃংখলভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনানুগ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে সার্বক্ষণিকভাবে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাকর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান।
বিভিন্ন সংস্থা (নির্বাচন কমিশন, সিভিল প্রশাসন, নির্বাচন অফিস, গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার) ইত্যাদির সঙ্গে সমন্বয় সাধন।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে সম্পৃক্ত সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহায়তা।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবেলার ক্ষেত্রে আইনানুগ বিধি-বিধান প্রতিপালন পেশাদারিত্ব ও যথাযথ সর্তকতা অবলম্বন এবং যথাসম্ভব দলবদ্ধভাবে অবস্থান করার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত তথ্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ইউটিউব, ব্লগ এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভ্রান্তি মূলক পোস্ট মন্তব্য বা ছবি আপলোডকরণ মনিটরিং ও বিভ্রান্তি মূলক পোস্ট অপসারণের সংশ্লিষ্ট পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান।
গার্মেন্টস শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, ছাত্র সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্ব সহকারে মোকাবেলার ক্ষেত্রে পরামর্শ প্রদান এবং নজরদারি বৃদ্ধি ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা প্রদান।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অনাকাঙ্ক্ষিত কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনানুগ পদ্ধতিতে সমাধানের গ্রহণের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান।
পুলিশ সদস্য কোন আচরণ কর্মকাণ্ড মনিটরিং করা যাতে সামগ্রিকভাবে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি সমুন্নত থাকে।
নির্বাচন উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান।
অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ অন্যান্য রায়ট সামগ্রী স্টক যাচাই এবং প্রয়োজনে চাহিদাকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সমন্বয় সাধন।
সহিংসতা নৈরাজ্য অপতৎপরতার কাজে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর নগর বিশেষ শাখা/জেলা বিশেষ শাখার নজরদারি বৃদ্ধি করাসহ আগাম তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম জোরদার করণের লক্ষ্যে পরামর্শ প্রদান।