ঢাবি প্রতিনিধি: ডিবির মিথ্যা পরিচয়ে প্রতারিত হয়ে টাকা খোয়ানোর পর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী পুলিশের হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হলেন- ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সী ও মার্কেটিং বিভাগের তানভির হোসেন। মুন্সী ঢাবি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি এবং তানভির উক্ত সোসাইটির সদস্য। প্রতারণার শিকার হওয়ার পর তানভিরের সঙ্গে থানায় জিডি করতে যান মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সী।
মাহমুদ আবদুল্লাহ মুন্সী সাংবাদিকদের বলেন: রোববার বিকেলে তানভিরের মায়ের মুঠোফোনে ডিবি পরিচয়ে একজন কল করে বলেন যে, তানভিরকে তারা আটকে রেখেছেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি রকেট নম্বর দিয়ে দ্রুত তাতে ৩০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। ওই সময় তার মা তানভিরের নম্বরে কল করেন, কিন্তু তিনি তখন ক্লাসে ছিলেন বলে কল ধরতে পারেননি। পরে তিনি টাকা পাঠিয়ে দেন। বিষয়টি জেনে তানভিরকে নিয়ে তার মা শাহবাগ থানায় জিডি করতে যান। সেখানে কর্তব্যরত কর্মকর্তা জিডি নিতে গড়িমসি করেন। তাদের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাসের কাছে যেতে বলেন ওই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন: জাফর আলী সাহেবের কাছে গেলে তিনি আমাদের অনেক সময় দাঁড় করিয়ে রাখেন। তিনি আমাদের কথা শুনছিলেন না। কেন শুনছেন না, জানতে চাইলে এক পর্যায়ে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং আমার গায়ে হাত তোলেন। আমাকে টেনে-হিঁচড়ে তার চেয়ারের সামনে নিয়ে অপমানিত করেন।
প্রতারণার শিকার তানভির চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: জিডি করতে গেলে শাহবাগ থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা সাইবার ক্রাইমে ইউনিটে যেতে বলেন। জিডি নেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি জাফর আলীর কাছে পাঠান। কিন্তু তিনি আমাদের হেনস্তা করেন। এরপর সেখান থেকে বের হয়ে আমরা বেইলি রোডের পুলিশ হেডকোয়ার্টারের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে গেলে সেখান থেকে জিডির কপি চাওয়া হয়। জিডি করতে আবার শাহবাগ থানায় এলে তারা আবার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে যেতে বলে। তখনো তারা জিডি নিতে চাননি। আর জিডি নিলে লেখা পরিবর্তন করতে বলেন। এরপর আমরা থানা থেকে চলে আসি।
জাফর আলী বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন: তিনি বিষয়টি জানেন না। এমন হওয়ার কথা নয়। তার কাছে গেলে তিনি বিষয়টি দেখবেন।
এরপর রাত পৌনে নয়টার দিকে মুন্সী ও তানভির থানায় ওসির কাছে যান। তানভির বলেন: ওসি সাহেব আমাকে বলেছেন, এ ঘটনায় জিডি হবে না। সোমবার গিয়ে যেন মামলা করি। আর অভিযুক্তের বিষয়ে কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গিয়ে আনসার সদস্যদের হাতে লাঞ্চিত হন দুই শিক্ষার্থী।