সভ্যতার ইতিহাসের বর্বরতম পিলখানা হত্যাযজ্ঞের ৮ম বার্ষিকীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। বিচারবিভাগ তার কাজ ঠিকমতো করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পিলখানা ট্রাজেডির ৮ম বার্ষিকীতে ওই ঘটনায় নিহতদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানসহ নিহতদের স্বজনরা চোখের জলে ওই ঘটনায় শহীদদের স্মরণ করছেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ চলাকালে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা হয়। পরে মামলা দু’টি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত করা হয়। এবং মামলার বিচার চলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর বিএনপির সাবেক সাংসদ নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (মারা গেছেন), স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেন আদালত।
ওই রায়ের পর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ‘ডেথ রেফারেন্স’ হাইকোর্টে আসে। সেই সাথে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল ও জেল আপিল করেন। এদিকে বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে রাস্ত্রপক্ষ।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওই মামলা শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন বলে জানান এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সারওয়ার। এর আগে ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ রাইফেল থেকে ৮ম বারের মতো নাম পরিবর্তন করে দাপ্তরিকভাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) করা হয় আধাসামরিক এ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নাম। বদলে ফেলা হয় পোষাকও (ইউনিফর্ম)। প্রায় সোয়া দুই শ’ বছরের এ বাহিনীতে পিলখানা ট্র্যাজেডির মতো এত বড় বিদ্রোহ আগে কখনও সংঘটিত হয়নি।