আমাদের দেশে নির্বাচন এলেই টাকা ও ক্ষমতার দাপট বেড়ে যায়। বিশেষ করে প্রার্থীরা ভোট পেতে ভোটারদের নানা রকম প্রতিশ্রুতি ও বৈষয়িক লাভের প্রলোভন দেখান। এতে করে আমাদের মত দেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর রাজনৈতিক প্রার্থী হওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে।
তবে এক্ষেত্রে এবার আশার বাণী শুনিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে কালোটাকা ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তার ওপর নজর রাখছে দুদক। কোন উৎস থেকে নির্বাচনী ব্যয় করা হচ্ছে, সেটা নির্বাচনের পর খতিয়ে দেখা হবে।’
বৃহস্পতিবার দুদক চেয়ারম্যান গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘কেউ কালো টাকা ব্যবহার করলে তাদের তালিকা তৈরি করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে কাজ করতে সংস্থার গোয়েন্দা বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক ব্যবহৃত নগদ টাকার অধিকাংশই সৎপথে উপার্জিত টাকা নয়। এর বেশিরভাগ অংশই কালো টাকা অর্থাৎ দেশের প্রচলিত অর্থনৈতিক সংজ্ঞায় অসৎ ও অবৈধপথে উপার্জিত টাকা। প্রতি নির্বাচনে এই কালো টাকার দৌরাত্ম্য নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করে। তবু দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা যেহেতেু এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সেহেতু দেশের প্রচলিত আইন কানুন যেন এই ক্ষেত্রে অসহায় দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
আমরা এবার আশার আলো দেখছি দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে। তিনি বলেছেন: ‘কে কতগুলো গরু জবাই করলেন, কতগুলো খাসি জবাই করলেন, কতগুলো লাল পোস্টার করলেন, যেটা আইনসিদ্ধ নয়; সেগুলো আমাদের ইনটেলিজেন্স ইউনিট কালেক্ট করে একটি তালিকা তৈরি করবেন। আমরা ওই রিপোর্ট নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
আমরা মনে করি, এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। দুদকের ভূমিকা এমন জোরালো হলে নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার কমবে এবং প্রার্থীদের আস্ফালন কমবে, যা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। সকল অনৈতিক সুবিধা কমলে নির্বাচন দেশের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।