কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের অভিযোগে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন তার নিজ কর্মস্থল ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের নার্স ও ঢাকা নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু হয়। দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর কল্যাণপুরে ধর্ষক ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেছেন ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের তানিয়ার সহকর্মী নার্সরা।
গত সোমবার ঢাকা থেকে নিজের বাড়ি ফেরার পথে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলন্ত বাসে শাহিনূর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণ করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীরা যৌন হয়রানিসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। কর্মস্থলে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি নারীদের যৌন হয়রানিসহ ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনাগুলোতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন, যেনো এ ধরনের কর্মকাণ্ডের আগে অপরাধীরা হাজারবার চিন্তা করে।
একই শাস্তি দাবি করে দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ঢাকা নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা নার্সিং কলেজের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অরগানাইজেশন নামে একটি সংগঠন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই ধর্ষণকারীদের বিচার না হলে ধর্ষণ চলতেই থাকবে।
সংগঠনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দ্রুত কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে কিংবা অপরাধীরা আইনের ফাঁকফোকর গলে পার পেয়ে গেলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সোমবার রাতে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালের এ নার্সকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠে স্বর্ণলতা পরিবহণের চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে তাদেরকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন চালক নুরুজ্জামান (৩৯) ও সহকারী লালন মিয়া (৩৩)।
এ ঘটনায় গাড়ির চালক ও তার সহকারীসহ চারজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় মামলা করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, হত্যার আগে তানিয়াকে গণধর্ষণ করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এর আলামত পাওয়া গেছে।
কটিয়াদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বাসে একা পেয়ে তানিয়া গজারিয়া এলাকায় গাড়ীর চালক ও সহকারী তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রাস্তায় ফেলে দেয়। সেখান থেকে এলাকাবাসী তাকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তানিয়ার বড় ভাই বাদল মিয়ার অভিযোগ, ধর্ষণের পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে।
শাহিনুর আক্তার তানিয়া কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। তিনি রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন।