থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নামে হয়রানি আর নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন নাটোরের নলডাঙ্গাবাসীর অনেকে।
তবে ওসি এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার।
নাটোরের নলডাঙ্গার সমসখলসি গ্রামের ক্যান্সার আক্রান্ত নাজিম উদ্দিনের অভিযোগ, অন্যের কাছে পাওনা ৫ লাখ টাকা আদায়ের জন্য নলডাঙ্গা থানার ওসি সুবীর দত্তের সাহায্য নিতে যান তিনি।
‘ওই টাকা আদায় করে দিতে তার কাছে ৪০ হাজার টাকা চান ওসি। নাজিম ৪০ হাজার টাকা দিয়েও পাওনা টাকা ফেরত পাননি। উল্টো আরো টাকার জন্য ওসি চাপ দিতে থাকেন বলে জানান নাজিম ও তার বাবা নাসির উদ্দিন নাসু।’
একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম লালু অভিযোগ করেন, তার নামে মামলা আছে বলে স্থানীয় মোমিনপুর বাজার থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে দু’দিন থানায় আটকে রেখে তার পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা।
লালুর বড় ভাই নায়েবুল ইসলাম জানান, লুলুকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় খোঁজ করতে থানায় যান তিনি। কিন্তু লালুকে তখন না ছেড়ে পরে আবার নায়েবুলকে ডেকে পাঠান ওসি। বলেন, নগদ ৪০ হাজার টাকা না দিলে লালুকে মুক্তি দেয়া হবে না। ওই টাকা দিয়ে ভাইকে ছাড়িয়ে আনেন নায়েবুল।
তখন তাকে দিয়ে থেকে দু’মাসের মধ্যে ১ লাখ টাকার দেয়ার জন্য ওসি স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে নেন বলে দাবি করেন নায়েবুল। কিন্তু এতো টাকা দিতে না পারায় এখন ওসির কাছ থেকে ফোনে হুমকি পাচ্ছেন তিনি। তাই ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নলডাঙ্গার প্রায় ৪০ জনের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছেন ওসি সুবীর দত্ত। তার বিরুদ্ধে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
পরিস্থিতিকে ‘দুঃখজনক’ অভিহিত করে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাষ্ট্রের একজন নিরাপত্তাকর্মীর এ ধরণের আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সবাইকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাস দমনের নামে নিরীহ মানুষকে হয়রানির তাৎক্ষণিক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
নলডাঙ্গা থানার ওসি ক্যামেরার সামনে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। তবে ফোনে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা শুনে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে যান পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জি। তাদেরকে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ জানিয়ে এরপর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
ওসির নামে আনা অভিযোগগুলোর দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।