যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের পর নর্থ কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীন। রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়া নর্থ কোরিয়ার সঙ্গে চীন বস্ত্র বাণিজ্য স্থগিতসহ দেশটিতে তেল সরবরাহ সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার চীন এই ঘোষণা দিয়েছে বলে বিবিসি জানায়।
চীন হচ্ছে নর্থ কোরিয়ার বড় বাণিজ্য সহযোগী এবং তাদের অন্যতম আয়ের উৎস। চীনের বস্ত্র বাণিজ্য স্থগিতের এই সিদ্ধান্তের ফলে নর্থ কোরিয়ার আয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া চীনের তেল নর্থের পেট্রোলিয়াম প্রস্তুত করণের প্রধান উৎস।
চীন জানায়, চলতি মাসে নর্থের পারমানবিক পরীক্ষার কারণে তারা কঠিন এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘও বস্ত্র এবং পেট্রোলিয়ামের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে একমত হয়েছে।
আগামী ১ অক্টোবর থেকে পরিশোধিত প্রেট্রোলিয়াম দ্রব্যের ওপর সীমাবদ্ধতা কার্যকর এবং শীঘ্রই প্রাকৃতিক গ্যাস তরলীকরণ করা হবে বলে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। তবে জাতিসংঘের অনুমোদনের আওতায় সীমিত পরিমানে সরবরাহ অব্যাহত থাকবে।
অবশ্য দুই দেশের বর্তমান বাণিজ্য পরিমাণ কতো এবং কী পরিমাণ সীমিত করা হয়েছে তা জানা যায়নি। কিন্তু নর্থ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি দ্রব্য বস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশটিকে বছরে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি গুণতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে নর্থ কোরিয়ায় তেল রপ্তানি বন্ধে জাতিসংঘের প্রস্তাবে চীন এবং রাশিয়া বিরোধিতা করে। কিন্তু পরবর্তীতে রপ্তানি পরিমাণ কমাতে একমত হয় তারা।
এর আগে নর্থ কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হবে উল্লেখ করে জাতিসংঘে ট্রাম্প যে ভাষণ দিয়েছেন তার জবাবে নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে’ উল্লেখ করেছেন। কিম জং উনের এই বক্তব্যের পর তাকে ‘উন্মাদ’ বলে টুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘উন্মাদ’ আখ্যায়িত করে কিম বলেছেন, জাতিসংঘে দেয়া ভাষণের জন্য ট্রাম্পকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে। পাল্টা জবাবে টুইট করে ট্রাম্প বলেছেন, কিম ‘পাগল ছাড়া আর কিছু নন’। এমন পরীক্ষায় তাকে তিনি ফেলবেন, যেমনটা কিম ভাবতেও পারেন না।
বিবিসি জানায়, গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে প্রথম ভাষণে নর্থ কোরিয়াকে ধ্বংস করার হুমকি দিয়ে ভাষণ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ইংরেজিতে বিশেষ বিবৃতি দিয়েছেন কিম জং উন।
এই বাগযুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি এখন যথেষ্ট ‘জটিল আর নাজুক’ বলে দুই দেশকেই সতর্ক করেছে চীন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র লু ক্যাং বলেছেন, পরস্পরকে উসকানি না দিয়ে সব পক্ষেরই এখন সংযত হওয়া উচিৎ।